,

নবীগঞ্জে ঘুমন্ত স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা স্বামী ও শ্বাশুড়ি গ্রেফতার

এম.এ আহমদ আজাদ ॥ নবীগঞ্জের পল্লীতে যৌতুকের জন্য আগুনে পুড়ে মরতে হয়েছে গৃহবধু রোমানাকে। ৭ দিন আগে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছিলো তার পাষন্ড স্বামী। গুরুতর আহত গৃহবধু রোমানা ৭ দিন মৃত্যূর সাথে লড়াই করে গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে মৃত্যূবরণ করেছে। এঘটনায় পাষন্ড স্বামী নানু মিয়া ও শ্বাশুড়িকে গত মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের কাছে স্বামী নানু মিয়া পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানোর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি দিয়েছে। এঘটনায় এলাকায় শোকের মাত্তম বিরাজ করছে। জানা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোমানার মৃত্যু হয়। ঢাকায় রোমানার পোষ্ট মর্টেম শেষে তার লাশ নবীগঞ্জে নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়েছে। রোমানার ভাই আব্দুর রউফ মোবাইলে জানান স্থানীয় সংরক্ষিত আসনের এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী তত্বাবধানে রোমানার লাশ ময়না তদন্ত হয়েছে। রোমানার পারিবারিক সূত্র জানায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের ছিটফরিদপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের কন্যা রোমানা বেগম (২৩) স্বামীর বাড়িতে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়ে কিছুদিন পূর্বে তার বাবার বাড়ি এসে আশ্রয় নেয়। গত বুধবার গভীর রাতে তার পাষন্ড স্বামী নানু মিয়া (৩৫) ঘুমন্ত অবস্থায় তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় রোমানার চিৎকারে পরিবারের লোকজন জেগে উঠে দেখেন তার সারা শরীর পুড়ে গেছে। তাৎক্ষণিক অবস্থায় রোমানাকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তার অবস্থার অবনতি হলে মুমূর্ষ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে প্রেরণ করা হয়। এদিকে, হবিগঞ্জ-সিলেট আসনের সংরক্ষিত মহিলা এমপি কেয়া চৌধুরী দোষীদের গ্রেফতারের জন্য সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানান। পুলিশ আসামীদেরকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালায়। এ ব্যাপারে রোমানার পিতা আব্দুর রহিম বাদী হয়ে রোমানার স্বামী নানুকে আসামী করে অজ্ঞাত ৫ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত রবিবার নবীগঞ্জ থানায় মামলা রেকর্ড হয়। পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে রোমানার শাশুড়ি মায়া বেগমকে বালাগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিকেলে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ চিরুনী অভিযান চালিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী শেরপুর পয়েন্ট থেকে অগ্নিদগ্ধ রোমানার স্বামী নানু মিয়াকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত নানু মিয়া ওসমানীনগর থানার কালনীড়চর সম্মানপুর গ্রামের ছালিক মিয়ার পুত্র। নিহত রোমানা বেগমের বাবা আব্দুর রহিম বলেন, আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য প্রান দিতে হলো। আমি পাষন্ড নানু মিয়ার ফাঁসি চাই। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল বাতেন খান জানান, তারা রোমানার মৃত্যর খবর পেয়ে সাভার থানার সাথে যোগাযোগ করেছেন। স্বামী শাশুড়ি কে দ্রুত গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দোষীদেরকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে রোমানার শ্বাশুড়ি ২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এব্যাপারে স্থানীয় সংরক্ষিত আসনের এমপি আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী বলেন আমি এই মর্মান্তিক বিষয়টি প্রথম থেকে তদারকি করছি। রোমানার লাশের ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ কে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।


     এই বিভাগের আরো খবর