,

রশিদপুর ও সাটিয়াজুরি রেলওয়ে রুটে অভিনব কায়দায় তেল চুরি

আব্দুল হামিদ ॥ বাহুবল উপজেলার রশিদপুর ও চুনারুঘাট উপজেলার সাটিয়াজুরি রেলওয়ে রুটে প্রতিদিন অভিনব কায়দায় চুরি হচ্ছে আন্তঃনগর ট্রেনের তেল। জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী উদয়ন, পাহারিকা, জালালাবাদ, জয়ন্তিকা, উপবন, পারাবত ও সুরমা মেইলসহ মালবাহী ট্রেনের চালকের রুম থেকে কৌশলে ইঞ্জিন রুমে ঢুকে পাইপ খুলে বড় বড় ১০০ লিটারের ড্রামে ভর্তি করে এখন তা পাচার করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই তেল চুরির মূল হোতারা এবার স্থান পাল্টানোর পাশাপাশি চুরির কৌশলও পাল্টেছে। আগে প্ল্যাষ্টিকের বস্তায় করে রিকশাযোগে তেল পাচার করা হলেও এখন ইঞ্জিন রুম থেকে সরু পাইপ দিয়ে তেল বের করে। পরে ড্রামে ভরে তা বস্তাবন্দি করে ষ্টেশনের নির্ধারিত স্থানে ফেলে দেয়। আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা ক্রেতা বা দালালরা সেটা সংগ্রহ করে। গোপন সূত্রে জানা গেছে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত তেল বিক্রি করে একেকজন দালাল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেলওয়ে কর্মকর্তা জানান, তেল চুরি তো খুব কমন বিষয়। এই বিষয় নিয়ে আপনাদের মাথা না ঘামালেও চলবে। ইতিপূর্বে স্থানীয় পত্রিকায় শায়েস্তাগঞ্জ, সুতাং রেল ষ্টেশন থেকে রেল কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে লাখ লাখ টাকার তেল চুরি সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের তৎতপরতায় কিছুদিন বন্ধ হয়ে যায় এ চোর চক্রের কার্যক্রম। কিন্তু বর্তমানে আবারও এ চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সূত্র জানায়, এই চোরাই তেল সিন্ডিকেট রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগসহ রেলের কতিপয় কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে দেদারসে এই অবৈধ কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মালবাহী বা যাত্রীবাহী রেলগাড়ির ইঞ্জিনের ক্যাপসুল খুলে শত-শত লিটার ডিজেল তেল নামানো হয়ে থাকে। চোরাই সিন্ডিকেটের লোকদের নিকট প্রতিটি রেল চালকের মোবাইল ফোন নম্বর রয়েছে। কখন কোন সময় রেলগাড়িগুলো ষ্টেশনে এসে পৌঁছাবে পূর্ব থেকেই জানানো হয়। ঠিক সেই মূহুর্তে সিন্ডিকেটের লোকজন হাতে প্লাষ্টিক ড্রাম নিয়ে প্রস্তুত হয়ে প্রথম সিগন্যাল এর নিকট পৌঁছে যায়। চালক গাড়িটির গতি কমিয়ে দিলে তারা গাড়িতে উঠে ইঞ্জিনের ক্যাপসুল খুলে ৩০-৩৫ মিনিটের ভেতরে ২০০-২৫০ লিটার তেল বের করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। অভিযোগ রয়েছে এতে সহযোগিতা করে থাকেন ষ্টেশন মাষ্টার। জানা গেছে, বর্তমান তেলের মূল্য অনুযায়ী প্রতি লিটার তেল ৪০/-টাকা কমে ক্রয় করে থাকে চোররা। সচেতন মহল মনে করেন এভাবে চলতে থাকলে জাতীয় সম্পদ মারাত্মক ক্ষতিগস্থ হবে। অচিরেই রেলওয়ে মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই অতি সত্ত্বর চোরাই তেল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর