,

ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া’ দিবস পালিত

রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন \
জয় বাংলা, জয় বাংলা এবং শেখ মুজিব, শেখ মুজিব আর মুক্তিযোদ্ধের সূচনা স্থল ও ডাকবাংলোর স্মৃতি সংরক্ষণ করতে হবে-করে নাও এমন দৃপ্ত শ্লোগানের মধ্য দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার হবিগঞ্জে পালিত হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সদর দপ্তর ‘ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া দিবস’। এ উপলক্ষে আয়োজন করা এক মুক্তিযোদ্ধা জনতার সমাবেশ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল ৯টা থেকেই সবুজ চা পাতার গাছে গাছে ঘেরা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি বিজরিত এই স্থানটিতে জমায়েত হতে থাকে শত শত বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান ও তরুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে ভীড়তে থাকেন প্রগতি ও মুক্তিচেতনার বিভিন্ন পেশার সাধারন মানুষ। যেন এই স্থানটি পরিনত হয় ৭১’ এর রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলায়। একপর্যায়ে তা প্রায় ১০ সহস্রাধিক মানুষের জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এরই মধ্যে একে একে আসতে থাকেন হবিগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ। মুক্তিযোদ্ধাদের কন্ঠে সেই ৭১’এর জয় বাংলা শ্লোগানের আবারও পদধ্বনি ও মুহুমুহু করতালির মাঝে সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) হেলাল মুর্শেদ (বীর বিক্রম) কে নিয়ে মঞ্চে উঠেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ৩নং সেক্টর ও এস ফের্সেও অধিনায়ক সাবেক সেনা প্রধান ও সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল কে এম শফি উল­াহ বীর উত্তম। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার এডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠানের সঞ্চালনায় এবং কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান হেলাল মুর্শেদের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকিত করেন সাবেক সেনা প্রধান কে.এম শফি উল­াহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম, এসপি জয়দেব কুমার ভদ্র, এডিশনাল এসপি হায়াতুন্নবী, বিজিবি ৫৫ ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল সাজ্জাদ হোসেন, সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক সহ ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, বি-বাড়িয়া, কুমিল­া, ময়মনসিংহ সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডারগণ। মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের হাতে প্রধান অতিথি শফি উল­াহ সহ অন্যান্য অতিথিদেরকে ফুলের তোড়ায় শিক্ত করার পর শুরু হয় ওই দিবসের প্রেক্ষাপট নিয়ে মূল আলোচনা পর্ব। আলোচনায় পর্বে প্রধান অতিথি সাবেক সেনা প্রধান শফি উল­াহ পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৭১’ সালে হবিগঞ্জের ওই স্থানটিকে প্রথম সদর দপ্তর কেন করা, কিভাবে যুদ্ধ পরিচালনা এবং বিজয় ছিনিয়ে আনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এই দেশে এখনও বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধা-তাদের সন্তান সহ প্রগতিমনা সকল মানুষকে ৭১’এর ন্যায় আবারও সন্ত্রাস-জঙ্গী মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে অগ্রনী ভ’মিকা পালনের আহবান জানান। অনুষ্ঠানে মুক্তিযদ্ধের প্রথম সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত তেলিয়াপাড়াস্থ ওই স্থানটিকে সংরক্ষণ ও ডাকবাংলোটিকে জাদুঘরে পরিণত করার জন্য উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা-তাদের প্রজন্ম সহ সাধারন মানুষের পক্ষ থেকে জোরালো দাবী উঠলে প্রধান অতিথি শফি উল­াহ ও হেলাল মুর্শেদ সহ অন্যান্য অতিথিগণ তাদের সম্মতি প্রকাশ করে বলেন, এই বাস্তবসম্মত আরও আগেই বাস্তবায়ন হওয়া উচিত ছিল। যা খুবই দুঃখ জনক। তারপরও আমরা এই দাবী দ্রুত বাস্তবায়নে জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলবো।


     এই বিভাগের আরো খবর