,

হবিগঞ্জে জেলার ৩৫ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট কৃষকদের মধ্যে হাহাকার

স্টাফ রিপোর্টার \ গত দুই দিনের বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে কৃষকদের মধ্যে এখন চলছে শুধু হাহাকার। তবে বেসরকারীভাবে ক্ষতির পরিমান আরো বাড়বে। বন্যার আশংকায় এখন আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছে শ্রমিকরা। তবে পানি থেকে ধান কাটতে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। হবিগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে হবিগঞ্জ জেলার ৮টি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছি কিন্তু চৈত্রের শেষে দিকে অকাল বন্যা ও গত দুই দিনের টানা বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে জেলার গুঙ্গিয়াজুরি হাওর, গণকির হাওর, ভরগাও হাওর, কালুয়ার বিল, খাগাউড়া হাওরসহ অধিকাংশ জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। আবারো বন্যার কবল থেকে বাঁচতে কৃষকরা জমি থেকে আধা পাকা ধান কেটে নিয়ে আসছে। শ্রমিকরা জানিয়েছেন যে কোন সময় আবারো বন্যায় তলিয়ে নিয়ে যেতে পারে সেই আশংকায় তারা আধা পাকা ধান কেটে নিয়ে আসছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর জেলার বিভিন্ন হাওরে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় কৃষকদের বুকফাটা আর্তনাথ। তাদের রঙ্গিন স্বপ্ন এখন ধুলিসাৎ হয়ে পড়েছে। বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া ইউনিয়নের আব্দুল হাই জানান, অনেক ঋন করে জমি করেছিল কিন্তু সবটুকু জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন আমরা পথে বসতে শুরু করেছি। যদি সরকার কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা না করে তাহলে অনাহারে দিন কাটাতে হবে আমাদের। একই উপজেলার পাশ্ববর্তী সারামপুর গ্রামের কৃষক মনর উদ্দিন অনেকটা বিমর্ষ অবস্থায় জমির পাড়ে বসে থাকতে দেয়া গেছে। এসময় তিনি জানান অনেক আশা নিয়ে ঋণ করে জমি করেছিলাম কিন্তু অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে সব হারিয়ে গেছে। এখন ছেলে মেয়েদের নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। কোন ধরনের উপায়ন্তর দেখি নাই। একই গ্রামের কৃষক রহমত আলী জানান, বন্যা আর অতি বৃষ্টিতে আমাদের স্বপ্ন পানি করে দিয়েছে। এখন ঋণের বোঝা নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে। কি করে যে ঋণের টাকা পরিশোধ করবো ভেবে পাচ্ছি না। যদি সরকার কিছুটা ক্ষতিপুরনের ব্যবস্থা করে তাহলে কিছুটা হলেও জান বাচবে। হবিগঞ্জ জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান জানিয়েছেন অকাল বন্যা ও গত দুই দিনের অতি বৃষ্টি পাহাড়ি ঢলে জেলার ৮টি উপজেলায় প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি জানান কৃষকদের ক্ষতির বিষয়টি তারা মনিটরিং করছে। সরকারী ভাবে যেটুকু সহায়তা করা সম্ভব হবে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তিনি জানান কৃষকদের ম্যাসেজ দেয়া হয়েছে যেটুকু জমির ধান কাটার উপযুক্ত হয়েছে সেগুলো আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে কাটার জন্য বলা হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর