,

হত্যাকান্ডের পর ঘাতক স্বামী স্ত্রীর পলায়ন ॥ নবীগঞ্জের গৃহবধু নাইমা কুমিল্লায় খুন

সেলিম তালুকদার ॥ নবীগঞ্জের নাইমা আক্তার সবুজ (২৫) নামের এক গৃহবধু কুমিল্লায় খুন হয়েছেন। কুমিল্লা সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে নাইমার লাশ তার আত্মীয় স্বজনের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ব্যাপারে নাইমার স্বামী মোঃ আব্দুল মোহিত বাদি হয়ে কুমিল্লা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল রবিবার রাতে নাইমার লাশ তার পিত্রালয়ে নিয়ে আসা হলে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। নিহত নাইমার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের আকামত আলীর কন্যা নাইমা আক্তার সবুজকে প্রায় ১০ বছর পূর্বে বিয়ে দেয়া হয় একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের হালিতলা গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের পুত্র মোঃ মোহিত মিয়ার সাথে। বৃষ্টি ও সালমা নামের তাদের দু’টি কন্যা সন্তান রয়েছে। নাইমা ও মোহিত দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা সদরের দক্ষিনচর্থা এলাকার কালাম মাষ্টারের বাড়িতে ভাড়া থেকে নাইমা গার্মেন্টসে ও মোহিত রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলো। মাঝে মধ্যে তারা নবীগঞ্জ আসতো। কিছুদিন পূর্বে নাইমা তার স্বামী মোহিতের চাচাতো ভাই খালেদকে নবীগঞ্জের একটি এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা লোন তুলে দেয়। প্রথমদিকে খালেদ লোনের টাকার কিস্তি ঠিকমত পরিশোধ করে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে খালেদ বাড়িতে ঝগড়া করে সিলেট চলে যায়। এদিকে কিস্তির টাকা না পেয়ে এনজিও কর্মকর্তা ও কেন্দ্র প্রধান হালিতলা গ্রামের রশিদা আক্তার প্রতিনিয়ত কিস্তির টাকার জন্য নাইমাকে চাপ দিয়ে আসছিলো। গত শুক্রবার কেন্দ্র প্রধান হালিতলা গ্রামের রশিদা আক্তার মোবাইল ফোনে নাইমাকে কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিলে সে খালেদকে গালমন্দ করছিলো। এসময় পাশের বাসায় বসবাসরত খালেদের চাচাতো ভাই মিনু মিয়া ওরপে রকিব ও তার স্ত্রী নুরুন্নাহার নাইমার সাথে কথা কাঠাকাটির এক পর্যায়ে মিনু মিয়া ও তার স্ত্রী নুরুন্নাহার নাইমাকে বেধরক মারধোর করে। এক পর্যায়ে নাইমাকে মাটিতে ফেলে নির্মমভাবে পিঠিয়ে গুরুতর আহত করে মিনু ও তার স্ত্রী। এ সময় নাইমার কন্যা বৃষ্টির আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে নাইমাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। শনিবার রাত সাড়ে ১০ টায় হাসপাতালে নাইমার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে নাইমার স্বামী মোঃ মোহিত মিয়া বাদি হয়ে কুমিল্লা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মিনু মিয়া ও তার স্ত্রী নুরুন্নাহার পালিয়ে যায়। রবিবার সকালে নাইমার লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার আত্বীয় স্বজনের কাছে সমজিয়ে দেয় পুলিশ। রাত ১০ টায় আত্বীয় স্বজন নাইমার লাশ নিয়ে তার পিত্রালয় সুজাপুরে আসলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। বাড়িতে কান্নার রোল উঠে। আশপাশের লোকজন একনজর নাইমাকে দেখতে তার নিজ বাড়িতে ভীড় জমান। ৮ বছরের নাইমার কন্যা বৃষ্টি কেঁদে কেঁদে বলে তার সামনে তার মাকে মিনু মিয়া ও তার স্ত্রী নুরুন্নাহার মারধোর করেছে এবং পরদিন তার মা মারা গেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর