,

বাংলাদেশ যুদ্ধ জাহাজ রপ্তানি করতে সক্ষম হবে ॥ চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সময় ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ধীরে ধীরে ‘বায়ার নেভী’ থেকে ‘বিল্ডার নেভী’তে পরিণত করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যুদ্ধ জাহাজ রপ্তানি করতে সক্ষম হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ধীরে ধীরে ‘বায়ার নেভী’ থেকে ‘বিল্ডার নেভী’তে পরিণত করা হবে এবং একদিন আমরা যুদ্ধজাহাজ রপ্তানি করবো ইনশাআল্লাহ। গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ মিডশিপম্যান-২০১৫ পরিদর্শন এবং বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের সময়ে এসেই দেশে নৌবাহিনীর দক্ষ ব্যবস্থাপনায় খুলনা শিপইয়ার্ড এবং নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে দেশীয় প্রযুক্তিতে আধুনিক যুদ্ধজাহাজ নির্মিত হচ্ছে। গত মাসে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত দু’টি সাবমেরিন বিধ্বংসী লার্জ পেট্রোল ক্রাফট ‘দুর্গম’ ও ‘নিশান’ নৌবহরের কমিশন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডে আধুনিক ফ্রিগেট তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। তিনি ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে বলেন, একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্য হিসেবে সর্বদা ঊর্ধ্বতনদের প্রতি আনুগত্য ও অধঃস্তনদের সহমর্মিতা প্রদর্শন করবে। চেইন অফ কমান্ড মেনে চলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিশ্ব দরবারে আরো গৌরবোজ্জ্বল আসনে অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে। তিনি পাসিং আউট ক্যাডেটদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত হয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্বে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন এবং কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তিন বছরে প্রশিক্ষণে সব বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী ক্যাডেটকে সোর্ড অব অনার প্রদান করেন। ২০১৫ ব্যাচের সোহানুর রহমান সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন করে প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে মিডশিপম্যান সীমান্ত নন্দী আকাশ ‘নৌবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার অ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট এ জেড এম নাসিমুল ইসলাম ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ গ্রহণ করেন। পরে প্যারেড কমান্ডার নবীন অফিসারদের শপথ গ্রহণ করান। এর আগে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম নৌঘাঁটিতে এসে পৌঁছলে তাকে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল এম আবু আশরাফ স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, জাতীয় সংসদের সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, কুটনৈতিকবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহের অংশগ্রহণে গত মাসেই কক্সবাজারে আইওএনএস মাল্টিলেটারাল মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এক্সারসাইজ-এর মতো বৃহৎ ও আন্তর্জাতিক সমুদ্র মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মহড়ার সফল আয়োজন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের নতুন ভাবমূর্তি সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য বহির্বিশ্বে এখন পথিকৃত ধরা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্ট হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানে জাতি হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে আরো মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। শীতকালীন এই কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে ২১ জন মহিলা, একজন শ্রীলঙ্কান, একজন মালদ্বীপসহ ৯২ জন মিডশিপম্যান এবং ১২ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ১০৪ জন কমিশন লাভ করেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর