,

এসআই জাকিরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ

জুয়েল চৌধুরী ॥ শায়েস্তাগঞ্জে স্কুলছাত্রী বিউটি আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরার হাতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসম শামছুর রহমান ভূঞা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসম শামছুর রহমান ভূঞা জানান, তদন্তকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার সু-স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে যেদিন ঘটনা ঘটে এর ৮ দিন পর ভিকটিমের মেডিকেল করানো হয়। এর মাঝে সে ভিকটিমের পরিবারের সাথেও যোগাযোগ করেনি। আসামীকেও সে ধরতে ব্যর্থ হয়। এই ঘটনায় সালিশেরও উদ্যোগ হয়। তারপরও সে কিছু করতে না পারা শুধু কর্তব্যে অবহেলা নয় বরং তার দক্ষতারও অভাব রয়েছে। যদি যথা সময়ে মেডিকেল করানো হত এবং আসামীকে গ্রেফতার করা হত তাহলে হয়ত বিউটিকে হত্যা করতে পারত না হত্যাকারী। তিনি আরও জানান, শায়েস্তাগঞ্জ থানার (ওসি) মোঃ  আনিসুর রহমানকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। এর আগে সোমবার এস আই জাকির হোসেনকে কোজ করেন পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা। গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয় কমিটিকে। হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামছুর রহমান ভূইয়াকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা ও সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। তারা নির্ধারিত সময়ের মাঝেই প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত ২১ জানুয়ারি শায়েস্তাগঞ্জের ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের দিনমজুর সায়েদ আলীর মেয়ে বিউটি আক্তারকে (১৪) বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। এক মাস তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। এক মাস নির্যাতনের পর বিউটিকে কৌশলে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল। এ ঘটনায় গত ১ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা স্থানীয় ইউপি মেম্বার কলমচানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে মেয়েকে সায়েদ আলী তার নানার বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। এরপর বাবুল ক্ষিপ্ত হয়ে ১৬ মার্চ বিউটি আক্তারকে লাখাই উপজেলার গুনিপুর গ্রামে তার নানার বাড়ি থেকে রাতের আঁধারে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। ফের ধর্ষণের পর তাকে খুন করে লাশ হাওরে ফেলে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিউটিকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ১৭ মার্চ তার বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল মিয়াসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা কলমচান ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ঈসমাইলকে আটক করে। এরপর ৩১ মার্চ সিলেট থেকে প্রধান আসামী বাবুলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে রবিবার আদালত তার বিরুদ্ধে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রসঙ্গত, এ ঘটনা নিয়ে হবিগঞ্জসহ সারাদেশে আলোচনার ঝড় বইছে।


     এই বিভাগের আরো খবর