,

নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ বাজার নির্বাচনের ফলাফল অন্ধকারে! ফেসবুকে ফলাফলের অপ-প্রচার প্রার্থী ও ভোটারদের চাপা ক্ষোভ

শাহ সুলতান আহমেদ ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত করা হলেও কয়েকজন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিজয়ী হয়েছেন মর্মে নানা অপ-প্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  তাদের এই অপ-প্রচার নিয়ে বিভিন্ন ফল প্রার্থী, সাধারন ভোটার ও সচেতন মহলের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। ফেসবুকের এই অপ-প্রচার নিয়ে যেকোন মুহুর্তে অনাকাঙ্কিত ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা। সূত্রে প্রকাশ,  গত ২৮ এপ্রিল ইনাতগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির  ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়। ভোট কারচুপি, প্রিজাইডিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশনারের দায়ীত্বে অবহেলা এবং ভোট গনণায় গরমিলের অভিযোগে প্রার্থী ও ভোটারদের ক্ষোভের ফলে ফলাফল স্থগিত করা হয়। ওই বিষয় নিয়ে ইনাতগঞ্জ বাজারে ভোটর ও প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করলে তাৎক্ষনিকভাবে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন-হাসানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। এবং ওই বিষয়টি মীমাংসার জন্য তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার আশ্বাসে সব প্রার্থীগন ঐক্যমত পোষন করেন। গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও প্রার্থীদের দ্বিধাবিভক্তির কারণে শেষ পর্যন্ত ফলাফল স্থগিতই রয়ে গেল। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদকে দায়িত্ব দিয়ে সাত কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু একদিকে চেয়ারম্যানের কাছে  প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়টি পক্রিয়াধীন থাকলেও তাকে ডিঙ্গিয়ে প্রার্থী ও তার পক্ষ নিয়ে  গতকাল শনিবার বিকাল থেকে একই সময়ে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে বিজয়ী ঘোষনা করে পোষ্ট দেন। এদের মধ্যে সাধারন সম্পাদক প্রার্থী নোমান হোসেন (চাকা প্রতীক) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে পাচঁটি ছবি সম্বলিত বিজয় চিহ্ন নিশ্চিত করে একটি পোষ্ট করেন। এতে তিনি লিখেন- “তাকে নির্বাচিত করার জন্য বাজার ব্যবসায়ী ভাইদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা, এবং বিজয় তার একা নয় বিজয় হয়েছে ইনাতগঞ্জ বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের। অপরদিকে, যুগ্ম সম্পাদক প্রার্থী ইজাজুর রহমান (বাল্ব প্রতীক) তার আইডি থেকে লিখেছেন, তাকে সহ-সম্পাদক পদে নির্বাচিত করার জন্য বাজার ব্যবসায়ীদের শুভেচ্ছা জানান। সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী মোঃ সাজ্জাদুল (ফুটবল প্রতীক) বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের সালাম, আদাব জানিয়ে তাকে নির্বাচিত করার জন্য সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন এ বিজয় তার একা নয় এ বিজয় ইনাতগঞ্জ বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের। এদিকে সভাপতি পদ প্রার্থী দিলবার হোসেন (হরিণ প্রতীক) এর নিকটাত্মীয় আবির আহমেদ জুনেল নামের যুবক তার ফেসবুক আইডি থেকে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর প্রাপ্ত ফলাফল ঘোষনা করেন। তার এই বিভ্রান্তকর পোষ্টকে ঘিরে অনেক প্রার্থীর মনের মধ্যে ক্ষোভ আরো চাঙ্গা হয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন ‘রেজাল্ট প্রকাশ করার সে আবার কে? তার ক্ষমতার দৌড় কত দূর? ওই নির্বাচনের ভোটার ও বাজারের ব্যবসায়ী সালেহ নূর অভিযোগের সুরে বলেন, ফেসবুকে যারা বিজয়ী ঘোষনা করছেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হউক। যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফল প্রার্থী সহিদুল ইসলাম ভুট্টো, সাংগঠনিক সম্পাদক ফল প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, সভাপতি ফল প্রার্থী আমন উদ্দিন, সিরাজ উদ্দিন, সাহিন আলম চাও মিয়া, সাধারন স¤পাদক ফল প্রার্থী সাংবাদিক আশাহিদ আলী আশা, শুয়াইবুর রহমান, সহ সভাপতি ফল প্রার্থী শেখ জামাল আহমেদ সুমন ও কোষাধ্যক্ষ ফল প্রার্থী আবু সায়েদ তারা বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও ভালো ফলাফলে আশায় রয়েছি। এরপরও যারা বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে তাদের সুষ্ট বিচার চাই। সব মিলিয়ে ওই বাজারের নির্বাচনের ফলাফলকে নিয়ে আজ ৯ দিন যাবৎ চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষন। যে বিষয়টি নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘড়িয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পর্যন্ত হিমশিম খেতে হচ্ছে এরপরও নির্বাচনী ফলাফল ধুম্রজাল সৃষ্টি করতে একটি চক্রের ফেসবুকে বিভিন্ন পোষ্ট ও কাল্পনিক ফলাফল তৈরীর মূল হোতা কে? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সচেতন মহলে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন-হাসান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৫০% ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে বিষয়টি সমাধান করতে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছি। তিনি আরো বলেন, যেহেতু ওই নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত রয়েছে, এখন কোন প্রার্থী যদি নির্বাচিত হয়েছে বলে অপ-প্রচার করে অবশ্যই অপরাধ করেছে। ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ বলেন, ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে এবং ভোট পূনঃগনণা হবে, না আবারো ভোট গ্রহন হবে তা ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে নির্ভর করছে। বিষয়টি এখনো পক্রিয়াধীন আছে। এ অবস্থায় কোন প্রার্থী যদি বিজয়ী হয়েছে মর্মে প্রচার করে তাহলে অপরাধের শামিল।


     এই বিভাগের আরো খবর