,

নবীগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার ফল নিয়ে হতাশ অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিছে হতাশা। বিগত সালের চেয়ে এবার কমেছে জিপিএ- ৫ ও পাশের হার। আশানুরূপ ফল না হওয়ার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেক শিক্ষার্থী। এই ধরনের ফলাফল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে অংশ নেয়া এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ৩ হাজার ১২১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ৩ জন কৃতকার্য হয়েছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ৩৫ জন। উপজেলায় গড় পাশের হার ৬৪.১৮%। গত বছর পাশের হার ছিল ৭৮.৪১%। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪৯ জন। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফল বিপর্যয়ের কারণে নবীগঞ্জের শিক্ষকদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোচিং বাণিজ্যকে দায়ী করছেন অনেকেই। গত রবিবার দুপুরে
সারাদেশে একযোগে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হলে নবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের দেয়া তথ্যে দেখা যায়, নবীগঞ্জ জেকে মডেল হাইস্কুল থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৭৫ জন। এরমধ্যে ১ টি জিপিএ-৫’সহ ১৫২ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। ওই স্কুলে পাশের হার ৫৫.২৭%, হিরামিয়া গার্লস হাইস্কুলের ১৫৫ জন অংশ নেয়। তার মধ্যে ৮টি জিপিএ-৫’সহ কৃতকার্য হয়েছে ১১৬ জন। পাশের হার ৭৪.৮৪%, হোমল্যান্ড আউডিয়াল স্কুল থেকে ৭০ জন অংশ নেয়। তার মধ্যে ১১টি জিপিএ-৫সহ পাশ করেছেন ৬০ জন। পাশের হার ৮৬%, হাজী আঞ্জব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬০ জন অংশ নেয়। তারমধ্যে পাশ করেছে ৭৯ জন। পাশের হার ৪৯.৩৮%, রাজরানী সুভাষিণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৮৬ জন অংশ নেয়, এরমধ্যে পাশ করেছেন ৯৪ জন। পাশের হার ৫০.৫৩%, হযরত শাহ তাজউদ্দিন কুরেশী হাইস্কুলের ১৭৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮৭ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার ৪৯.৭১%, ইনাতগঞ্জ হাইস্কুলের ২৩৯ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১৬২ জন পাশ করেছে। পাশের হার ৬৮%, বনকাদিপুর আমজাদ আলী হাইস্কুলের ৬৫ জন অংশ নেয়। তার মধ্যে ১টি জিপিএ-৫সহ পাশ করেছে ৫০ জন। পাশের হার ৭৬%, দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ে ১১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৮১ জন। পাশের হার ৭২.৯৭%, নাদামপুর হাইস্কুল থেকে ১৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩টি জিপিএ-৫সহ পাশ করেছে ১৩১ জন। পাশের হার ৯৩%, বাগাউড়া হাইস্কুলের ২০০ জন অংশ নেয়। তারমধ্যে ৪টি জিপিএ-৫সহ ১৪৯ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার ৭৫%, এসএনপি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে অংশ নেয় ১০৪ জন, এরমধ্যে ২টি জিপিএ-৫সহ পাশ করেছে ৯৭ জন। পাশের হার ৯৩%, বিবিয়ানা আদর্শ হাইস্কুলে থেকে ৭২ জন অংশ নেয়, পাশ করেছে ৪৬ জন, পাশের হার ৬৪%, আউশকান্দি র.প. হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২৬১ জন অংশ নেয়, জিপিএ-৫ ২টিসহ পাশ করেছে ১৫৪ জন, পাশের হার ৫৯%, ঘোলডুবা এমসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দেয় ১১৪ জন, ১টি জিপিএ-৫সহ পাশ করেছে ৪৩ জন, পাশের হার ৩৭.৭২%, সৈয়দ আজিজ হাবিব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নেয় ১৩৬ জন, পাশ করেছে ৯৮ জন। পাশের হার ৭২.০৫%, গোপলার বাজার হাইস্কুল থেকে অংশ নেয় ১১৮ জন, পাশ করেছে ৬৬ জন, পাশের হার ৫৫.৯৩%, মতিউর রহমান হাইস্কুল থেকে ২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার ৫১.২৫%, দিনারপুর হাইস্কুলের ৩০১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ ১টিসহ ১৭৩ জন পাশ করেছে। পাশের হার ৫৭% এবং রাগীব রাবেয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২৭৭ জন অংশ নেয়, এরমধ্যে জিপিএ-৫ ১টিসহ ২০১ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার ৭২%। এছাড়া ভোকেশনাল ২১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮ জন পাশ করেছে। পাশের হার ৮৫.৭১%। ফল প্রকাশের পর গতকাল কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়গুলিতে ঠিকমত ক্লাস হয় না এবং শিক্ষকেরা সঠিক সময়ে স্কুলে উপস্থিত হন না। শিক্ষার মান ভালো না হওয়ার কারণে ফলাফল বিপযয়ে গেছে। শিক্ষকের খামখেয়ালির কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মান খারাপ হয়েছে। অনেকেই জানান, শিক্ষকরা ঠিকমত লেখাপড়া করালে ফলাফল বিপযয়ে হত না। শিক্ষকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শুরু করেন কোচিং বাণিজ্য। এ পরীক্ষায় অনেক শিক্ষার্থীর আশানুরূপ ফল না হওয়াতে হতাশ হয়ে পড়েন। ক্ষুব্ধ পতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকেই।


     এই বিভাগের আরো খবর