,

অন্য নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিককে হত্যা!

লাখাইয়ে কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার ॥ আটক ২,

লাখাই থেকে ফিরে জুয়েল চৌধুরী ॥ লাখাইয়ে একাদিক সম্পর্কের কারণে প্রেমিকার হাতে উজ্জল মিয়া (২২)  নামে এক কলেজ ছাত্র খুন হয়েছ। ২ মাসপর ওই ছাত্রের বস্তাবন্দি গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ এ ঘটনায় প্রেমিকা বৃন্দাবন কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্রী ও তার পিতাকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর গতকাল সোমবার সন্ধার হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা এক প্রেস ব্রিফ্রিং এর মাধ্যমে এ ঘটনার বর্ণনা দেন। তিনি জানান, গত ২০ ফ্রেব্রুয়ারী লাখাই উপজেলার মুড়াকড়ি গ্রামের শাহ আলমের পুত্র সঈদ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র উজ্জল মিয়া নিখোজ হয়।

 প্রেস ব্রিফিং করছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা

প্রেস ব্রিফিং করছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা

২৬ ফেব্রুয়ারী লাখাই থানায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে ১০২৬ নাম্বারে একটি জিডি এন্টি করা হয়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে এবং তার কল লিস্টের সুত্র ধরে তারা নিশ্চিত হয় মোড়াকড়ি ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের মঞ্জু মিয়ার মেয়ে ওই কলেজ ছাত্রী ফারজানা আক্তারের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। পরে পুলিশ সুপারেরর নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম ও ওসি এমরান হোসেন এবং এসআই আমিনুল ইসলামসহ একদল পুলিশ গতকাল রবিবার সকালে ধর্মপুর গ্রামের অভিযান চালিয়ে ফারজানা ও তার পিতাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

উজ্জল মিয়া’র ফাইল ছবি

উজ্জল মিয়া’র ফাইল ছবি

দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গতকাল সোমবার সকালে ফারাজানা ঘটনার কথা স্বীকার করে। গতকাল সোমবার দুপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্মপুর গ্রাম থেকে ১ কিলোমিটার দুরে মেদি বিলের কচুরিফানার নিচ থেকে উজ্জলের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় লাশের দূ-গন্ধে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। উৎসুক জনতাকে সামাল দিতে হিম-শিম খায় পুলিশ। আটককৃত ফারজানার বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, উজ্জল ও ফারজানার মাঝে দীর্ঘ দিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। ফারজানার মা-বাবা ঢাকাতে চাকরির সুবাদে প্রায়ই তাদের মধ্যে শারিরিক সম্পর্ক চলে আসছিল। গত ২০ ফেব্রুয়ারী রাতে ফারজানা এবং উজ্জল যখন আমুদ ফুর্তি করছিল এ সময় উজ্জলের ফোনে তার অন্য প্রেমিকার কল আসে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উজ্জল তাকে গাল মন্দ করে, তখন ফারজানা নিজে নিজে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে তার মত ঘোরায় এবং সে সিদ্ধান্ত নেয় নিজেকে শেষ করবে না। বরং তার ভন্ড প্রেমিক উজ্জলকে আর বাচঁতে দিবে না। তখন শিল পাঠার পুতাইল দিয়ে উজ্জলের মাথায় আঘাত করে এতে উজ্জল মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে। তার পরও মারা না যাওয়ায় তার গলায় দড়ি পেছিয়ে শ্বাসরুদ্ব করে হত্যা করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত হতে হাত, পা, ও গলার রগ কাটে। মারা যাওয়ার পর তার লাশ ঘরের মেঝেতে মাটি গর্ত করে লুকিয়ে রাখে এবং এর পরদিনই ঢাকা থেকে তার মা বাবাকে নিয়ে আসে। তার বাবা ও চাচারা লাশ বস্তাবন্দি করে মেদি বিলে ফেলে আসে। লাখাই থানার ওসি এমরান হোসেন জানান, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আটককৃতদেরকে কোর্টে প্রেরণ করা হবে। অন্যান্যদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।


     এই বিভাগের আরো খবর