,

কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন রোধে চলমান কাজে দুর্নীতির অভিযোগ

১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাতে নেয়া হচ্ছে নতুন প্রজেক্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে কুশিয়ারা এলাকায় নদী ভাঁঙ্গন রোধে গৃহীত বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে দুদক ও সংসদীয় কমিটির কাছে অভিযোগ প্রেরণ করা হয়েছে। উক্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। এনিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখতে একটি আলাদা কমিটি করেছে। অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে জাতীয় সংসদের হুইপ সামসুল হক চৌধুরী কুশিয়ারা ডাইক এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করে গেছেন। দুদকের একটি টিম আসার কথা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় হচ্ছে। কুশিয়ারা ডাইকের প্রায় আড়াই কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়মের খবরে আলোচনা সমালোচনা চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনেও। সম্প্রতি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক সম্প্রতি কুশিয়ারা ডাইক ও ভাঙ্গন এলাকা পরির্দশন করেন। তার নির্দেশনায় বর্ষা মৌসুম শুরুর পূর্বেই পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনরোধে দুই কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ওই প্রকল্প কাজের কার্যাদেশ পায় মৌলভীবাজারের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফাহাদ এন্টারপ্রাইজ। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের সাথে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা যুক্ত হয়ে দ্রুত গতিতে কাজ শুরু করে। নদীর ভাঙ্গনরোধ ও বাঁধ সুরায় শুরুতেই নি¤œ মানের কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠে। কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম দিয়ে কে বা কারা দুদক ও পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির কাছে অভিযোগ প্রেরণ করে। এরই প্রেক্ষিতে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী। এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহনওয়াজ মিলাদ গাজীসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সরেজমিন পরিদর্শনে অগ্রগতি নিয়ে হুইপ শামসুল হক চৌধুরী মোবাইল ফোনে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম দিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসলে আমরা তদন্ত করছি, আমি সরজমিনে বিষয়টি দেখেছি, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তবে কুশিরায়ার ডাইক রায় এবং বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডকে বাঁচাতে আমরা ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি । বর্তমান কাজ মাত্র  দুই কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে হচ্ছে। বিষয়টির অভিযোগ দুদকের কাছে দেয়া ঠিক হয়নি। এখনো কাজ চলমান আছে তাই অনিয়ম হয়েছে বলা যাবে না। কাজ শেষ হবার আগে এমন মন্তব্য সঠিক নয়। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার নদী ভাঙ্গন কবলিত দীঘলবাক এলাকার উন্নয়নে ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে প্রজেক্টের অনুমোদন দেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি। ৮১ হাজার গানি ব্যাগ ও ৪৩ হাজার জিও ব্যাগ নদীতে ফালানোর প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে ফাহাদ এন্টারপ্রাইজ। এনিয়ে হবিগঞ্জ আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে আলোচনার সূত্রপাত করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কোন অভিযোগ করি নাই। কে বা কারা আমার নাম ব্যবহার করেছে তবে অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হউক। সার্বিক বিষয়ে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনায় প্রকল্প কাজে সার্বক্ষণিক নজরদারী করেছি। এখানে দুর্নীতির সুযোগ নেই। নদী ভাঁঙ্গনরোধে গৃহীত ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে নি¤œমানের কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জাতীয় সংসদের হুইফ শামসুল হক চৌধুরী। কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফাহাদ এন্টারপ্রাইজের পক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা আজিজুল হক শিবলী দূর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর