,

নবীগঞ্জে দশম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণ ॥ থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউপির দেবপাড়া (বাশডর) গ্রামে গত শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায়  তাজ উদ্দিন কোরেশী (রঃ) উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণ করেছে একই গ্রামের সাহাবুদ্দিনের পুত্র মোঃ রাব্বী ওরফে রানা ও তার সহযোগীরা। এ সময় অপহৃতা স্কুল ছাত্রী ইফফাতুন তাবাসসুম জুলফা (১৬) চিৎকার শুরু করলে বাড়ির লোকজন বেড়িয়ে আসলে অপহরণকারীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এতে ওই ছাত্রীর পিতা, মাতা, বোনসহ ৫ জন আহত হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত ২ জনকে মুমুর্ষ অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ব্যাপারে অপহৃতা পিতা বাদি হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তাৎক্ষনিক নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও অপহৃতাকে উদ্ধার কিংবা অপহরণকারী কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, উপজেলার দেবপাড়া (বাশডর) গ্রামের বাসিন্দা ও বাউসা দেবপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ আবুল কাশেমের কন্যা ইফফাতুন তাবাসসুম জুলফা গ্রামের পার্শ্ববর্তী তাজ উদ্দিন কোরেশী (রঃ) উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণী ছাত্রী। একই গ্রামের সাহাবুদ্দিনের পুত্র মোঃ রাব্বী ওরফে রানা তার সহযোগীদের নিয়ে স্কুলে যাওয়া আসার সময় জুলফাকে প্রেমের প্রস্তাব ও অশ্লীল বাক্য প্রয়োগ করে আসছিলো। এ ঘটনা জুলফা তার পিতাকে জানালে তিনি মোঃ রাব্বী ওরফে রানার চাচাতো ভাই সাবেক মেম্বার জয়নাল আবেদীনের কাছে বিচার প্রার্থী হলে জয়নাল মেম্বার তার কথায় কোন কর্ণপাত না করে উল্টো মোঃ রাব্বী ওরফে রানার কাছে তার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মোঃ আবুল কাশেম একজন শিক্ষক হয়ে তার নাবালিকা মেয়েকে বিবাহ দেবেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করেন। গত শনিবার ইফফাতুন তাবাসসুম জুলফা তাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে গেলে গ্রামের সাহাবুদ্দিনের পুত্র মোঃ রাব্বী ওরফে রানা তার সহযোগীদের নিয়ে জোরপূর্বক গামছা দিয়ে জুলফার মুখ বাঁিধয়া তাদের বাড়ির পূর্ব দিকে রানাদের বাড়ির দিকে নিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে জুলফা চিৎকার শুরু করলে তার পিতা, মাতা, বোনসহ বাড়ির লোকজন এগিয়ে এলে তাদের উপর চলে হামলা। হামলার সময় জয়নাল মেম্বারও অংশ নেয় বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন জুলফার পিতা শিক্ষক মোঃ আবুল কাশম। হামলায় আহতরা হলেন জুলফার পিতা শিক্ষক মোঃ আবুল কাশম (৪০), মাতা মরিয়ম বেগম (৩৫), ছোট বোন মুক্তা বেগম (১৩), চাচী সাজনা বেগম (৩২) ও চাচা জিল্লুর রহমান (৪২)। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় মরিয়ম বেগম ও মুক্তা বেগমকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। মরিয়ম বেগমের পা ভেঙ্গে গেছে বলে আহত সুত্রে জানা গেছে। অন্যান্য আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনার খবর তাৎক্ষনিক নবীগঞ্জ থানায় মোবাইল ফোনে জানাইলে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ সাথে সাথে ঘটনাস্থলে যায় এবং অপহৃতাকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চালালেও অপহৃতাকে উদ্ধার কিংবা অপহরণকারী কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে অপহৃত স্কুল ছাত্রী ইফফাতুন তাবাসসুম জুলফার পিতা বাদি হয়ে প্রধান অপহরণকারী রানাসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাসহ অপরাপর ধারায় নবীগঞ্জ থানায় মঙ্গলবার রাতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর