,

বাহুবলে আকরাম হত্যা মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে বিধবা স্ত্রীর চরিত্রহনন

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ বাহুবলে আকরাম আলী হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তার বিধবা স্ত্রীর চরিত্রহননে লিপ্ত হয়েছে আসামীরা। এতে লোক লজ্জার ভয়ে পিতৃহারা পুত্র-কন্যারা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাহুবল মডেল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি তোলে ধরেন নিহত আকরাম আলীর স্ত্রী রুনা বেগম। তিনি বলেন, স্থানীয় মানবকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার আমার এক মেয়ে এসএসসি ও অপর মেয়ে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। এছাড়া একই বিদ্যালয়ে আমার ছোট ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে এবং স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওপর মেয়ে ১ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো। রুনা আক্তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, চলতি বছরের ৫ মার্চ বিকাল ৫টার দিকে আমার স্বামীর ভাই হাছন আলী (৪০), পিতা- আব্দুল শহিদ, হাসন আলীর স্ত্রী রাজ বানু (৩৫), আমার স্বামীর বোন রাজিয়া খাতুন (৫৫), রাজ বানু-এর বোন কদ বানু (২৮) ও রাজ বানু এর ভাই সাজিদ মিয়া (১৮) অতর্কীতে হামলা চালিয়ে আমার স্বামী আকরাম আলীকে হত্যা করে। এ ঘটনার পরদিন আমি বাদী হয়ে বাহুবল মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি। বাহুবল মডেল থানার মামলা নং- ০৩। এ ঘটনার প্রায় একমাস পর আসামীগণ ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার হীন উদ্দেশ্যে আমি, আমার পিতা, আমার ভাই ও আমার মামাকে আসামী করে আমার শাশুড়ি সুকারা বেগমকে ভুলবুঝিয়ে কোর্টে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করায়। উক্ত মামলায়ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমার চরিত্রহনন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুতে আমি অকালে বিধবা হয়েছি, আমার তিন কন্যা ও একমাত্র পুত্র হয়েছে পিতৃহারা। আমি আমার স্বামীর হত্যাকান্ডের বিচার চাওয়ায় তারা আমাকে চরিত্রহীনা প্রমাণে উঠে পড়ে লেগেছে। আমাকে চরিত্রহীনা প্রমাণ করতে গিয়ে তারা এলাকার সম্মানী লোকজনকে আমার সাথে জড়িয়ে মানহানীকর অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিধবা রুনা বেগম বলেন, আমার দায়েরি মামলাটি সিআইডি’র তদন্তাধিন আছে। আসামী পক্ষ আমাকে হুমকী-ধুমকী ও আমার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দিয়ে আমাকে ঘায়েল করতে ব্যর্থ হয়ে স্থানীয় মুরুব্বীদের মাধ্যমে হত্যাকান্ডের ঘটনাটি আপোষ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়। এক পর্যায়ে বাহুবল ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শীর্ষস্থানীয় মুরব্বীগণ এ বিষয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ আসামীগণ জনৈক মুরব্বীর নামে কিছু পরিমাণ জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। শর্ত থাকে মামলাটি খারিজ হলে ঐ মুরব্বী জমিটুকু আমি ও আমার সন্তানদের নামে রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে হস্তান্তর করবেন। সংবাদ সম্মেলনে নিহত আকরাম আলীর স্ত্রী রুনা বেগম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কন্যা তানিয়া আক্তার, নাদিয়া আক্তার, নাবিয়া আক্তার ও পুত্র নাবিল হোসেন, ওয়ার্ড মেম্বার শফিকুল ইসলাম, হত্যা মামলার আসামী হাছন আলীর আপন চাচা আব্দুল আহাদ, আরজু মিয়া, আব্দুর রহিম ও আব্দুল জব্বার, আব্দুল হক, চাচাত ভাই তাজুদ আলী ও হায়দর মিয়া, মামাত ভাই ছালামত মিয়া, মুরব্বী মারজত উল্লা, জহুরুল ইসলাম, আব্দাল চৌধুরী, আয়াত আলী, মারজত উল্লা, ইউপি মেম্বার শহিদুল ইসলাম, ইউপি মেম্বার মাসুক মিয়া সহ স্থানীয় লোক।


     এই বিভাগের আরো খবর