,

নবীগঞ্জে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিয়ে হিরা মিয়া গার্লস স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা

মুরাদ আহমদ ॥ নবীগঞ্জ শহরের একমাত্র হিরা মিয়া গার্লস হাইস্কুলে টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অর্ধেক শিক্ষার্থীকে অকৃতকার্য দেখিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় না করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আশরাফুল আলম একক সিদ্ধান্তে ফলাফল প্রকাশ করায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অকৃতকার্যের ফলাফলের মার্কশীট দেখার জন্য অভিভাবকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের প্রতি দাবী জানান। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের শান্তনা না দিয়ে বরং উল্টো তাদের তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এহেন আচরনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোব্ধ হয়ে উঠেন। হট্টগোলের খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ শহরের হিরা মিয়া গার্লস হাইস্কুলে ২০২০ সালের এসএসসির টেস্ট  পরীক্ষায় মোট ২ শত ১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। এর মধ্যে ১০৮ জন শিক্ষার্থীকে কৃতকার্য দেখানো হয়। বাকী ১০৭ জন শিক্ষার্থীকে গনিতসহ ৩, ৪, ৫টি বিষয়ে অকৃতকার্য্য দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশ করেন ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আশরাফুল আলম। গতকাল বিকেলে হিরা মিয়া গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভবকরা স্কুলে যান এবং অকৃতকার্যদের ফলাফলের মার্কশীট দেখার জন্য অভিভাবকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের প্রতি দাবী জানান। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের মার্কশীট না দেখিয়ে বরং উল্টো তাদের তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা চরম আকার ধারন করলে আশপাশের লোকজনসহ অসংখ্য উৎসুক জনতা ভীড় জমালে খবর পায় নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমানের নির্দেশে থানার সেকেন্ড অফিসার মোঃ সামছুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক এক শিক্ষক এ প্রতিনিধিকে জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় না করে একক সিদ্ধান্তে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আশরাফুল আলম ওই ফলাফল প্রকাশ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সূত্রে আরো জানাযায়, প্রায় ৮ মাস পূর্বে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই তিনি শিক্ষক/শিক্ষিকাসহ অভিভাবকদের মধ্যে সমন্বয় না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে উল্লেখিত ঘটনার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ-বিন-হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বিষয়টি শুনেছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিষয়টির ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম জানান, শিক্ষার্থী অরুনা গোস্বামীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা অসৌজন্যমূলক আচরনসহ হট্টগোলের সৃষ্টি করে। এছাড়া সূত্রে আরো জানাগেছে, কোন কোন শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ও কোন কোন শিক্ষার্থী তৃতীয় অর্থাৎ শেষ বারের মতো পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আশরাফুল আলম একক সিদ্ধান্তে ফলাফল প্রকাশের কারণে। ফলে তাদের শিক্ষা জীবন এখানেই শেষ হয়ে গেল।


     এই বিভাগের আরো খবর