,

নবীগঞ্জে বখাটের হামলার শিকার কলেজ ছাত্রী ও তার মা-বাবার পাশে হাসপাতালে ইউএনও

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যসমেত গ্রামে সোমবার সন্ধ্যায় বখাটের হামলায় কলেজ পড়–য়া কন্যাসহ পিতা-মাতা গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় নবীগঞ্জে তোলপাড় চলছে। খবর পেয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহত কলেজ ছাত্রী ও তার মা-বাবাকে দেখতে হাসপাতালে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ, টিএইচও আব্দুস সামাদ, ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার দাস, প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ সরওয়ার শিকদার, সহ-সভাপতি আশাহিদ আলী আশা, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ছাইমু উদ্দিন প্রমূখ। এ সময় নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়ে তাদের কাছ থেকে হামলার বিস্তারিত ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ আজিজুর রহমানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মতব্বির হোসেন জানান, তাদের একই গ্রামের গফুর মিয়ার পুত্র বখাটে জাইদুল মিয়া তার কলেজ পড়–য়া কন্যা রহিমাকে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করতো। যে কারণে বাধ্য হয়ে রহিমা কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয়। ক্ষিপ্ত জাইদুল গত সোমবার সন্ধ্যায় মতব্বির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে প্রথমে তার কলেজ পড়ুয়া কন্যা রহিমাকে দেশীয় স্টীলের রুইল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে। চিৎকার শুনে বাড়িতে থাকা তার পিতা মতব্বির হোসেন ও মাতা জাহানারা বেগম মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেদরক মারপিট শুরু করে হামলাকারী। এতে রহিমাসহ তার পিতা-মাতা গুরুতর আহত হন। হামলাকারী জাইদুল এ সময় রহিমার গলা থেকে জোরপূর্বক একটি স্বর্ণের চেইন ও একটি এনড্রুয়েট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বর্বরোচিত এ হামলার ঘটনার খবর স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশের পর বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহত কলেজ ছাত্রী ও তার মা-বাবাকে দেখতে হাসপাতালে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পাল। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ, টিএইচও ডাঃ আব্দুস সামাদ, ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার দাস, প্রেসকাবের সভাপতি মোঃ সরওয়ার শিকদার, সহ-সভাপতি আশাহিদ আলী আশা, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ছাইমুউদ্দিন। এ সময় নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়ে তাদের কাছ থেকে হামলার বিস্তারিত ঘটনা শুনে তাৎণিক নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ আজিজুর রহমান কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহণের নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, মতব্বির হোসেন এর কন্যা ইনাতগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী কলেজে যাওয়া আসার সময় রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন ও উত্ত্যক্ত করতো ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যসমেত গ্রামের মৃত গফুর মিয়ার পুত্র সিএনজি অটোরিকশা চালক জাইদুল মিয়া। ঘটনাটি জাইদুলের অভিভাবকদের জানানোর পরেও কোন বিচার পাননি মতব্বির হোসেন। এমনকি বিচার দেয়ায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে জাইদুল। তার ইভটিজিং এর শিকার হয়ে ওই ছাত্রী কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এমনকি ওই ছাত্রীর পিতা মাতা বাড়িতে না থাকার সুযোগে একা পেয়ে ধর্ষনের চেষ্টা চালায় জাইদুল। এ সময় জাইদুল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর বিভিন্ন ছবি মোবাইল ফোনে তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। তার চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে বড় বোন এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রীর পিতা মদব্বির হোসেন বাদী হয়ে জাইদুল হককে আসামী করে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পুলিশ তদন্ত শেষে জাইদুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট দাখিল করেছে। মামলাটি আদালতে বিচারিধীন রয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর