,

ইনাতগঞ্জে দাদন ব্যবসায়ী ভুট্টো’র খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব সাধারণ মানুষ

সংবাদদাতা ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে চক্রবৃদ্ধি সুদে দাদন ব্যবসায়ীর দৌড়াত্ব দিনদিন বেড়েই চলেছে। সামান্য পুঁজি নিয়ে দাদন ব্যবসা শুরু করে ইতিমধ্যে অনেকেই কোটিপতি বনে গেছেন। আবার অনেক সাবলম্বী পরিবারের মানুষ এদের খপ্পরে পড়ে ব্যবসা বাডুজ্য, ভিটেমাটি ও সহায়-সম্বল হাড়িয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। এসব দাদন ব্যবসায়িরা গ্রাহকের সারযুক্ত চেকবহি এবং স্বর্ণ জমা রেখে শর্ত সাপেক্ষে সাপ্তাহিক ও মাসিক ২০/৩০% হারে সুদে টাকা দিয়ে থাকেন। নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলেই স্বর্ণ অফেরতযোগ্য সাথে চেক ডিজওনার মামলা। অনেকেই আবার স্বাক্ষর জাল করেও মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন মানুষদের। এদিকে শহীদুল ইসলাম ভুট্টো’র বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সিলেট পুলিশের ডিআইজি, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক, হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার, র‌্যাব-৯, সিলেট দুর্নীতি দমন কমিশন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিরেও এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছেনা এলাকাবাসী। ফলে বেপরোয়া হয়ে দিন দিন তার অবিচার-নির্যাতন চলছে। চক্রবৃদ্ধিহারে সুদে দাদন ব্যবসায়ির কাছ থেকে সুদ নেওয়ার ফলে বিপদগ্রস্থ ব্যবসায়ী, কৃষক সহ নিরীহ মানুষ। অপর দিকে দিনদিন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ টাকার কুমির হচ্ছেন কতিপয় এ অসাধু দাদন ব্যবসায়ী।
সাধারন মানুষের কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল সাদা স্টাম্প, ফাকা চেকে সার নিয়ে চক্রবৃদ্ধি সুদে কিস্তিতে টাকা দেন দাদন ব্যবসায়ীরা। অসহায় মানুষ নিয়মিত সুদের টাকা দিতে না পারলে বা তার কাছে টাকা বেশিদিন পড়ে থাকলে তাকে চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ দ্বিগুন দিতে হয়। ইনাতগঞ্জের ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ চিহ্নিত সুদের ব্যবসায়িদের উপরোক্ত বর্ণনা দিয়েছেন।
ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বটপাড়া (বারকাপন) গ্রামের নাসির উদ্দিনের স্ত্রী সেনা বেগম বলেন, সোনালী ব্যাংক ইনাতগঞ্জ শাখায় যাওয়ার পথিমধ্যে আমার একটি চেক হারিয়ে যায়, এরপর আমি সাধারণ ডায়রি করি (জিডি নং-৬৬২)। পরবর্তীতে সুদখোর ভুট্টোর স্ত্রী তাছমিন বেগম বাদী হয়ে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা পায় মর্মে আমাকে উকিল নোটিশ করায় এর পর আমি জানতে পারি । আমি এই ঘটনার সুষ্ট বিচার চাই।
রাজনগর (ভূমিহীন) গ্রামের ধীনেষ শব্দ কর ও মঠাই শব্দ কান্নাকাটি করে বলেন, আমি বিপদগ্রহস্থ হয়ে ভুট্টো’র স্ত্রীর কাছ থেকে ব্লাইন চেক বহিতে সার দিয়ে ৩০ হাজার টাকা মাসিক কিস্তিতে সুদ আনতে বাধ্য হই। সময় মতো টাকা না দিতে না পাড়ায় আমি সহ পরিবারের উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে শহীদুল ইসলাম ভুট্টোর ভয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাই। সেই সুযোগে ভুট্টো আমার বাড়িঘর দখলে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে।
নবীগঞ্জের ২নং পূর্ব বড় ভাকৈর ইউনিয়নের বড়ভাকৈর গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাবেক মেম্বার হাবিবুর রাহমান হাবিব ক্ষোভের সাথে বলেন, ইনাতগঞ্জের দাদান ব্যবসায়ি শহীদুল ইসলাম ভুট্টো’র কাছ থেকে ফাঁকা চেক বহিতে সাক্ষরের বিনিময়ে ১লক্ষ টাকা সুদ আনি, কয়েক মাস চক্রবৃদ্ধিহারে দিগুণ সুদ দিয়ে আসা অবস্থায় আমার উপর সুদখোর শহীদুল ইসলাম ভুট্টো ৮লক্ষ টাকার চেক ডিজওনার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এছাড়া ইনাতগঞ্জের সুমন ও মুরাদ আহমদসহ অসংখ্য মানুষ সুদখোর ভুট্টোর কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা, সময় মতো টাকা দিতে না পারলেই মামলা-হামলা, ঘর বাড়ি দখল করে নিচ্ছেন ভুট্টো। দাদন ব্যবসায়ী ভুট্টো নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা, বড় বড় সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন। তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।


     এই বিভাগের আরো খবর