,

আগামীকাল থেকে শাখা বরাক নদীতে উচ্ছেদ শুরু, নবীগঞ্জের ১০১টি স্থাপনা উচ্ছে করা হবে

মতিউর রহমান মুন্না ॥ নদী সচল ও প্রবাহমান রাখতে নবীগঞ্জ উপজেলার শাখা বরাক নদীতে আগামীকাল মঙ্গলবার এবং হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন খোয়াই নদীতে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে ঘোষনা করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল রবিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান এই তথ্য জানান। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে ২৯ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। পুরাতন খোয়াই নদীতে পূর্বে অভিযানের পর এখন সেখানে ৫টি মসজিদ, ১টি মাদ্রাসা ও একটি মন্দির রয়েছে। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের কলোনী ও পূর্ণবাসনকৃত ১৯টি পরিবার রয়েছে। বিষয়গুলো মানবিক হওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থার সুযোগ দিতে কিছুটা ধীর গতিতে উচ্ছেদ পরিচালনা করা হয়েছিল। কিন্তু এবারের অভিযানে সবাইকে উচ্ছেদ করা হবে। নবীগঞ্জের শাখা বরাক নদীর ১০১টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। ইতোমধ্যে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
মামলা সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে তিনি বলেন, যেখানে সমস্যা থাকবে সেখানে মামলা নিস্পত্তি করেই উচ্ছেদ হবে। আর যেখানে সর্বোচ্চ আদালতের ডিক্রি রয়েছে সেখানকার জায়গা অধিগ্রহণ করে হলেও উচ্ছেদ করা হবে। অর্থাৎ সরকারী যায়গা পুনরায় ক্রয় করেও নদীর প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।
ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মর্জিনা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক অমিতাভ পরাগ তালুকদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত।

Nabiganj dc x

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নবীগঞ্জ উপজেলার ‘হাট নবীগঞ্জ, শিবপাশা ও রিফাতপুর মৌজার অন্তর্গত শাখা বরাক নদীর তীরবর্তী চরগাঁও ব্রীজ হতে রিফাতপুর, বরাকনগর এলাকায় অবৈধ বসবাসকারীদের সরকারী ভূমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা বসত ভিটি/দোকানভিটি উচ্ছদকল্পে নির্মাণকারীদের নামের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায় তালিকাতে নাম রয়েছে হাট বাজার মৌজার আবু কালাম চৌধুরীর টং দোকান, সিএনজি স্ট্যান্ড (আধা পাকা ঘর), আলম চৌধুরীর টং দোকান, আল-আমিন চৌধুরীর টং দোকান ২টি, খুশি মিয়ার আধা পাকা ঘর, অসিত পালের ৩ তলা ভবন, লিটন রায়ের চালের গুদাম, রাজু মিয়ার টয়লেট ও টিনসেট, আব্দুর রহমানের ৫ তলা ভবন, প্রতিমা হালদারের টিনসেট ও মুরগির দোকান, তপন রায়ের দোকান ঘর, সমির হালদারের দোকান ও আলুর গুদাম, নবীগঞ্জ পৌরসভার ৬টি আধা পাকা সবজির দোকান ঘর, চৌধুরী ফয়সল শোয়েবের ২ তলা বিল্ডিং, খাবার হোটল আধাপাকা, অসিত মেডিকেল হল আধা পাকা, স্বর্ণা মেডিকেল হল আধাপাকা, কর্ণেল সিকে দাশ এর পাকা দোকান, বাথরুম ও সাইড ওয়াল, আলহাজ আবুল কাশেমের বিল্ডিং, টিপলু ভট্টাচার্জের টিনসেট ও ওয়াল, আখড়ার ৪ অংশে পাকা ওয়াল, বাথরুম, ট্যাংকি, বাথরুম। শিবপাশা মৌজার- আনোয়ার রহমানের ২টি আধাপাকা, রাহেল চৌধুরীর পাকা ওয়াল, শেরপুর রোডের মসজিদের পাকা বাথরুম, আনোয়ার রহমানের আধাপাকা নুরানী মার্কেটের ঘর কয়েকটি ও পাকা ওয়াল, আনমনু মসজিদের পুকুর, আফাজ উদ্দিনের টিনসেড ১টি, আধাপাকা ২টি ঘর ও টয়লেট, কালা মিয়ার আধাপাকা ঘর, টয়লেট, রান্না ঘর, মহরম আলীর আধা পাকা ঘর ও টয়লেট, সানু মিয়ার ওয়াল, ২টি বাথরুম, আধাপাকা ঘর, খলিলুর রহমানের ১টি টিনসেট, কিম্মত আলীর ১টি টিনসেট, মগল আলীর ১টি টিনসেট, আপন মিয়ার ১টি টিনসেট, মমতা বেগমের ১টি টিনসেট, ছত্তার মিয়ার ১টি টিনসেট, জমাদার মিয়ার ১টি টিনসেট, আঃ ছালামের ১টি টিনসেট, আঃ মুকিদের ১টি টিনসেট, জহিরুল ইসলাম সোহেলের ১টি টিনসেট, আঃ মন্নাফের ১টি টিনসেট। রিফাতপুর মৌজার- কাজল মোহন ঘোষের ওয়াল, দেওয়ান বিউটি খানের ওয়াল ও ২ তলা বিল্ডিং, নেপআলমের ১ তলা বিল্ডিং, অজ্ঞাত ব্যক্তির ১টি ওয়াল, আঃ আওয়ালের আধাপাকা ঘর, শাহ ফজলুল করিমের ১ তলা বিল্ডিং ও টিনসেট, হাজী আব্দুল বশিরের আধাপাকা ঘর, রুশিয়া বেগমের ওয়াল, আজগর আলীর ওয়াল, সিএনজি স্ট্যান্ড, আফাজ মিয়ার ১টি টিনসেট, শওকত আলীর ১টি টিনসেট ও আধাপাকা, হাজি আব্দুর রাজ্জাকের ২ তলা ভবন, ফরহাদ মিয়ার ২ তলা ভবন, জুনায়েদ মিয়ার ১ তলা ভবন, ডাঃ শফিকুল ইসলামের ১ তলা ভবন, মকদ্দুছ আলীর ১টি পাকা ঘর, মোঃ রহিমা খাতুনের ১ তলা ভবন, তারা মিয়ার পুকুর ও টিন সেট, শাহেব আলীর ১টি টিনসেট, জাহির উদ্দিনের পুকুর, ইসলাম উদ্দিনের টয়লেট ও পুকুর, আঃ জব্বারের ২টি ওয়াল ও টয়লেট, আজমান আলীর ওয়াল-টয়লেট, আফাজ উদ্দিনের পুকুর, অফসর উদ্দিনের টয়লেট ও পুকুর পাড়, আবু সালের ১টি পুকুর, মোঃ নোমান মিয়ার ১টি পুকুর, মুকিম উল্লার ১টি পুকুর, ছালিক মিয়ার ১টি পুকুর, বাছিত মিয়ার টয়লেট ও পুকুর পাড়, হিরন মিয়ার ওয়াল, আব্দুল হাফিজ পাকা ওয়াল, মোঃ খানের পাকা ওয়াল, ছালেক মিয়ার পুকুর, ছত্তার মিয়ার পুকুর। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (অঃদাঃ) এম এল সৈকত স্বাক্ষরিত এক তালিকায় উপরোল্লিতদের নামের তালিকা দেয়া হয়। ওই তালিকায় অবৈধ স্থাপনার পরিমান, দাগ নং, ঘরের বিবরণ, অবস্থান ও মন্তব্য রয়েছে। যে যতটুকু জায়গা দখল করেছেন ততটুকুই উচ্ছেদ করা হবে। ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড, নবীগঞ্জ ভূমি অফিস ও পৌরসভার সার্ভেয়াররা সরেজমিনে দখলদারের নাম তালিকাভূক্ত করে বিভিন্ন বাসা-মার্কেটে লাল রঙ দ্বারা চিহ্নিত করে রেখেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর