,

করোনায় করণীয়

সময় ডেস্ক ॥ আজকের ‘আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখো’ আয়োজনে উঠে এসেছে করোনা প্রসঙ্গ। তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে এবং সফল হওয়ার কলাকৌশল শেখাতে কালের কণ্ঠের অনলাইনে নিয়মিত লিখছেন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক মোস্তফা কামাল। স্বপ্ন আর আশাজাগানিয়া লেখাগুলো পড়ুন কালের কণ্ঠ অনলাইনে। বিপদ কখনো বলে-কয়ে আসে না। বিপদ কখন আসবে তাও কেউ জানে না। দুঃখের পরে যেমন সুখ আসে; তেমনি রাতের পরে আসে দিন। খাল কিংবা নদীতে কেবল ভাটার টান দেখে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি না। কারণ, আমরা জানি জোয়ার আসবেই। এক জীবনে মানুষ কেবল সুখেই কাটায় না। দুঃখও আসে। আবার সারাজীবন মানুষ সুখে থাকবে তাও নয়। তাকে কিছু কষ্টও সহ্য করতে হয়। বিপদ আসতে পারে এটা ধরে নিয়েই মানুষকে জীবনধারণ করতে হয়।
একটা সময় এই দেশ ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ছিল। ক্ষুধার তাড়নায় দিন কাটত মানুষের। সেই অবস্থা এখন আর নেই। এখন আর বিদেশিরা বলে না, বাংলাদেশ মানেই বন্যা-দুর্বিপাকের দেশ। এখন বলে অমিত সম্ভাবনার দেশ। উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ। যদি প্রশ্ন করা হয়, এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংকট কি? সবাই এক কথায় বলবেন, করোনা ভাইরাস। এ এক অজানা শত্রু। বিশ্বের ১৭৯টি দেশ অজানা শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। সেই যুদ্ধের ময়দানে বাংলাদেশও আছে। এ পরিস্থিতিতে আপনি কী করবেন? আপনি কি হতাশায় ভেঙে পড়বেন? নাকি ধৈর্য ধারণ করবেন? ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন? আমরা দেখলাম, করোনায় আক্রান্ত কিছু মানুষ বিদেশ থেকে এসে নিজের পরিবারকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। একজন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে আবেগে গদগদ হয়ে বাবাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছে। সে বয়োবৃদ্ধ মানুষটিকে বিপদে ফেলে চলে গেছে। সেই বৃদ্ধ বাবাটি আর নেই! একটা উন্নত দেশ থেকে আসা লোকটি এতোটা নির্বোধ হলো কী করে! আরেকজন এসেছেন ইতালি থেকে। তিনি নিজের দুই সন্তানকে আক্রান্ত করেছেন। সেই সঙ্গে এদেশের অনেক মানুষকে আক্রান্ত করেছেন। এই লোক দুটি নিশ্চয়ই করোনার ঝুঁকি সম্পর্কে জানতেন! তাহলে তারা জেনেশুনে এই কাজ কেন করলেন? উন্নত দেশগুলো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমরা ঝুঁকি সামলাতে কতটা প্রস্তুত? এ মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার সচেতনতা। সচেতন না হলে এবং বিপদে হা-হুতাশ করলে বিপদ আমাদের পেয়ে বসবে। সাহস এবং ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। এই সচেতনতার কাজটা করতে পারে দেশের তরুণ সমাজ। সাহসের প্রতীক তরুণরা দেশব্যাপী সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারে। আমরা এখন পর্যন্ত যা দেখছি, সচেতনতার অভাবেই মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। তাছাড়া সারাবিশ্বে আক্রান্তের যে হার তারমধ্যে তরুণদের সংখ্যা খুব কম। করোনা ভাইরাস বেশি আক্রান্ত করে অসুস্থ বয়োবৃদ্ধদের। যারা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা কিংবা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাদেরকে দ্রুত আক্রান্ত করে। তরুণ সমাজ সারাদেশে চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও কাজ করতে পারে। করোনা এক অজানা বিপদ। যে কোনো মুহূর্তে কেটেও যেতে পারে। আবার অনেক দিন ধরে যুদ্ধও চালিয়ে যেতে হতে পারে। তার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। হা-হুতাশ করলে বিপদ ঘাড়ে চেপে বসবে। আসুন আমরা সবাই সচেতন হই। নিজে বাঁচি এবং অন্যকে বাঁচাই। অন্যের বিপদ দেখে আমরা যেন খুশি না হই। অন্যকে বিপদে ফেললে নিজে ভালো থাকা যায় না। বিপদ সবার জীবনে আসতে পারে। সবাই সবাইকে সহযোগিতা করলে যে কোনো বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সবাই মিলে ভালো থাকার আনন্দই তো আলাদা!


     এই বিভাগের আরো খবর