,

নবীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে গৃহবধুকে গণধর্ষনের অভিযোগ

পুলিশ বলছে- গৃহবধূর অসামঞ্জস্য বক্তব্যের কারণে মুল ঘটনা উদঘাটনে বিলম্ভ হচ্ছে।

 

আনোয়ার হোসেন মিঠু/ মতিউর রহমান মুন্না/সুমন আলী খান ॥ নবীগঞ্জে আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে এক গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে চলছে নানান আলোচনা ও সমালোচনা। নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত একটি ভবনে ওই গৃহবধুকে গণধর্ষণের অভিযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছে ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। তবে ওই গৃহবধু পুলিশের কাছে অসামঞ্জস্য বক্তব্য দেয়ায় ঘটনাটি নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ওই গৃহবধু উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তির স্ত্রী (২৫)। ওই গৃহবধু জানান, রবিবার (৪ অক্টোবর) বিকেল অনুমান ৫ টায় সে শেরপুর বাজার থেকে সিএনজি (অটোরিক্সা) যোগে মজলিসপুর তার এক আত্মীয় বাড়ীতে যারার পথে নির্দিষ্ট স্থানে নামিয়ে না দিয়ে তাকে হাত পা, মুখ বেঁেধ রাতভর বিভিন্নস্থানে নিয়ে যায় সিএনজি চালক ও তার সহযোগীরা। পরে গভীর রাতে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের একটি পরিত্যক্ত ভবনে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আরো ৬/৭ জন মিলে সংঘবদ্ধ ভাবে তাকে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের পরে সকালে আবার সিএনজি যোগে তাকে তার আত্মীয়ের বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর স্থানীয় কিছু মাতব্বর ও জনপ্রতিনিধিরা আপোষে বিষয়টি রফা দফার চেষ্টা চালান বলেও জানান ওই গৃহবধু। এছাড়াও ওই গৃহবধু ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশকে অসামঞ্জস্য বক্তব্য দেয়ায় সঠিক ঘটনা উদঘাটনে বিভ্রান্তিতে পড়েছে পুলিশ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ফেসবুক পোষ্ট নজরে আসলে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান নবীগঞ্জ-বাহুবলের সার্কেলের এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী ও নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমান।
এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী জানান, ওই গৃহবধু একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। একবার বলছেন ৭ জন লোক তাকে ধর্ষণ করেছে, কখনও বলছেন ৩ জন। আবার কখনও তিনি ১৪ থেকে ২১ জন তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জানান। তার অসামঞ্জস্য বক্তব্যের কারণে মুল ঘটনাটি উদঘাটন করতে বিলম্ভ হচ্ছে। তিনি আরো জানান, আমরা গভীরভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষন করে মুল ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা করছি। রাতের মধ্যেই মুল ঘটনা উদঘাটন হবে বলে আমরা আশাবাদী। এ ব্যাপারে আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুন জানান, গৃহবধুর অসামঞ্জস্য বক্তব্যে আমরা বিষয়টি নিয়ে ধ্রুমজালের মধ্যে পড়েছি।
এলাকাবাসী সুত্রে জানাযায়, উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামের জনৈক গৃহবধু দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার সৈয়দপুর বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিল। কয়েক দিন আগে তিনি রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন। কিন্তু ওই গৃহবধুর ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যে এলাকার অনেকেই মনে করছেন ওই গৃহবধু ধর্ষণের নামে নাটক সাজিয়ে যখন মনে যা আসে বানিয়ে বানিয়ে বলছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, যদি ওই গৃহবধু সত্যিই ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকেন তাহলে পরের দিন ওই ব্যক্তিরা কিভাবে তাকে তার আত্মীয় বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে? সে কি আসলেই ধর্ষণের শিকার হয়েছে, না কি তার স্বার্থ হাসিল না হওয়ায় এই নাটক সাজিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। এ নিয়ে ওই এলাকায় রসালো আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এলাকাবাসী সুত্রে আরো জানাযায়, আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনটি ফাঁকা থাকায় অনেক দিন যাবত রাতের বেলায় বিভিন্ন লোকজনের আগাগোনা লক্ষ্য করেছেন তারা। কিন্তু কি কারণে রাত-বিরাতে ওই জায়গা লোকেদের আনাগোনা হয় তা সঠিক ভাবে কেউ আঁচ করতে না পারলেও দীর্ঘদিন যাবত ওই ভবনটি পরিত্যক্ত থাকার কারণে সেখানে যে কোন ধরণের অবৈধ কার্যকালাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারনা করছেন তারা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই গৃহবধু ও তার স্বামীকে নবীগঞ্জ থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সর্বশেষ রাত সাড়ে ১২টায় নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- উদ্ধারকৃত গৃহবধু’র
অসামঞ্জস্য বক্তব্য দেওয়ার কারণে মূল ঘটনা উদাঘাটনে একটু বিলম্ব হচ্ছে। মামলা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর