,

দীর্ঘ দিন পর খুলছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান

পিন্টু অধিকারী ॥ আগামী ১লা নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান খুলে দেয়া হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আট মাস বন্ধ থাকার পর এখানে প্রবেশের সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। গতকাল বুধবার ২৮ অক্টোবর রাত ১১টায় চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী সত্যজিত রায় দাশ এ তথ্য জানিয়েছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত ১৯ মার্চ এ পর্যটন স্পটটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে গত আট মাস ধরে পর্যটক না আসায় বনটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য পুরোপুরিভাবে ফিরে পেয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। সাতছড়ি রেঞ্জ অফিসার মোতালেব জানিয়েছে, খোলা থাকলে সাতছড়িতে প্রতিদিন আড়াই থেকে পাঁচ হাজার পর্যটক আসেন। বয়স্কদের টিকিট বিক্রি হতো ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা। উল্লেখ্য, সাতছড়ি উদ্যানের ইতিহাস জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ১৯১২ সালে। ওই বছর প্রায় ১০ হাজার একর দুর্গম পাহাড়ি জমি নিয়ে গঠিত রঘুনন্দন হিলস্ রিজার্ভই কালের পরিক্রমায় আজকের উদ্যান। অবশ্য জাতীয় উদ্যান হওয়ার ইতিহাস বেশিদিনের নয়। ২০০৫ সালে ৬০০ একর জমিতে জাতীয় উদ্যান করা হয়। এ উদ্যানের ভেতরে রয়েছে অন্তত ২৪টি আদিবাসী পরিবারের বসবাস। রয়েছে বন বিভাগের লোকজন। পর্যটকদের জন্য চালু করা প্রজাপতি বাগান, ওয়াচ টাওয়ার, হাঁটার ট্রেইল, খাবার হোটেল, রেস্ট হাউস, মসজিদ, রাত যাপনে স্টুডেন্ট ডরমিটরিসবই এখন নিস্তব্ধ। উদ্যানে দুই শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে শাল, সেগুন, আগর, গর্জন, চাপালিশ, পাম, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, জাম, জামরুল, সিধা জারুল, আওয়াল, মালেকাস, আকাশমনি, বাঁশ, বেত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯৭ প্রজাতির জীব-জন্তুর মধ্যে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর। আরো আছে প্রায় ২০০ প্রজাতির পাখি। রয়েছে লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমা পরা হনুমান, শিয়াল, কুলু বানর, মেছো বাঘ, মায়া হরিণের বিচরণ। সরীসৃপের মধ্যে আছে কয়েক জাতের সাপ। কাও ধনেশ, বন মোরগ, লাল মাথা ট্রগন, কাঠঠোকরা, ময়না, ভিমরাজ, শ্যামা, ঝুটিপাঙ্গা, শালিক, হলদে পাখি, টিয়া প্রভৃতির আবাসস্থল এই উদ্যান।


     এই বিভাগের আরো খবর