,

নবীগঞ্জে অটোরিকশা চালক সেজু হত্যা মামলায় এক যুবক গ্রেফতার

রহস্য উদঘাটনে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন

জাবেদ ইকবাল তালুকদার ॥ নবীগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের ধান খেতে আবিদ উল্লাহ সেজু নামে এক অটোরিকশা চালককে হত্যা মামলায় সুয়েব মিয়া (৩৩) নামে একজনকে আটক করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত সুয়েব মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত সুয়েব মিয়া হবিগঞ্জ পৌর এলাকার উমেদনগর গ্রামের আলী আজগরের পুত্র। সুয়েব পিতা-মাতাসহ নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পশ্চিম তিমিরপুর গ্রামে দীর্ঘ ৮-১০ বছর যাবত বাড়ি বানিয়ে সুয়েব বসবাস করে আসছিল। জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গুজাখাইর গ্রামের সাহিদ উল্লাহ’র পুত্র আবিদ উল্লাহ সেজু গত শনিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু ওইদিন গভীর রাত হয়ে গেলেও সে আর ফিরে আসেনি। এমনকি তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের ধারণা-রাতের কোনো এক সময় অটোরিকশা চালানো অবস্থায় রিকশাসহ নিখোঁজ হন সেজু। এরপর তার আত্মীয়স্বজন সম্ভাব্য সকল স্থানে যোগাযোগ করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে রবিবার (২৫ অক্টোবর) আবিদ উল্লাহ সেজুর পরিবারের পক্ষ থেকে নবীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করা হয়। নিখোঁজ ডায়েরি দায়েরের পর থেকেই পুলিশ বিভিন্ন স্থানে সেজুর সন্ধান চালায় পুলিশ। নিখোঁজের ৪ দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সকালে নবীগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব তিমিরপুর এমআরসি ব্রিকস ফিল্ডের পার্শ্ববর্তী এক ধান ক্ষেত থেকে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় (২৮ অক্টোবর) আবিদ উল্লাহ সেজুর ভাই রাজু মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শামসুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে অপরাধীকে শনাক্তে ও ধরতে বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত (৩১ অক্টোবর) শনিবার গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র অনুযায়ী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শামসুল ইসলামের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পশ্চিম তিমিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সুয়েব মিয়াকে আটক করেন। পরে গতকাল রবিবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃত সুয়েব মিয়াকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ও হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে এবং অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ৫ দিনের জন্য রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই শামসুল ইসলাম। তবে এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের শিকার সেজুর অটোরিকশার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার এস আই ও হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ভাবে হত্যাকাণ্ডে সুয়েব মিয়ার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ও অধিকতর তদন্তের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, নবীগঞ্জ থানা পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করতে, আমরা আশাবাদী অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পারভেজ আলম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আটককৃত আসামীকে আমাদের সন্দেহ হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগেও কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। ঘটনার দিন থেকেই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন এবং আসামীদের গ্রেফতার করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি খুব শীগ্রই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন এবং হত্যার সাথে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করতে পারব।


     এই বিভাগের আরো খবর