,

চিকিৎসক না হয়েও তাঁরা রোগী দেখেন নিয়মিত

মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জে চিকিৎসক না হয়েও নামের আগে ‘ডাক্তার’ বসিয়ে রোগী দেখার অপরাধে দুই ব্যক্তিকে ভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থ জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল রবিবার বিকেলে এই আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মহিউদ্দিন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে নবীগঞ্জ উপজেলা পৌরসভার জয়নগর এলাকার বাসিন্দা কাজল দেবনাথকে (৩৮) তিন মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং একই উপজেলার রসুলগঞ্জ এলাকার অলক চন্দ্র দত্তকে (৫২) ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বাজারে একশ্রেণির লোক নিজেদের চিকিৎসক পরিচয়ে রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে আসছিলেন। এতে সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে প্রতারিত হয়ে আসছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বিকেলে ইউএনও শেখ মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ শহরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। প্রথমে উপজেলা হাসপাতাল সড়কের পাশে অবস্থিত দেবনাথ মেডিকেল সার্ভিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়।। এ সময় শিশুসহ নানা বয়সী রোগী দেখছিলেন কাজল দেবনাথ নামের এক ব্যক্তি। তাঁর কাছে চিকিৎসকের সনদ দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি। তাঁর চিকিৎসাকেন্দ্রে শিশুখাদ্যসহ অনুমোদনহীন নানা ওষুধ পাওয়া যায়। পরে কাজল দেবনাথকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩ মাসের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অর্থ অনাদায়ে তাঁকে আরও দুই মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এ সময় কাজল দেবনাথের ঘর তল্লাশি করে ভারতীয় চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করা হয়। পাশাপাশি তাঁর চিকিৎসাকেন্দ্রটি সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অপর দিকে উপজেলার রসুলগঞ্জ নতুনবাজারে পার্বতী ফার্মেসি নামে একটি ওষুধের দোকানে রোগী দেখছিলেন অলক চন্দ্র দত্ত নামের এক ব্যক্তি। তিনি চিকিৎসক না হয়ে নামের আগে ‘ডাক্তার’ উপাধি ব্যবহার করে সাইনবোর্ড লাগান। ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে আকস্মিক অভিযান চালান। আদালত চিকিৎসকের সনদ দেখতে চাইলে অলক চন্দ্র স্বীকার করেন তিনি চিকিৎসক নন এবং দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাঁর চেম্বারে অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া যায়। এ অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত অলক চন্দ্র দত্তকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে তাঁকে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁর প্রতিষ্ঠানটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসক না হয়েও চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে মানুষকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছিলেন। এতে অনেকেই প্রতারিত হয়ে আসছিলেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দণ্ড দেওয়ার পর সন্ধ্যায় পুলিশের মাধ্যমে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় সহযোগিতা করেন নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুস সামাদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) চম্পক কিশোর সাহা এবং নবীগঞ্জ থানার এস আই সম্রাট সহ একদল পুলিশ সদস্য।


     এই বিভাগের আরো খবর