,

নির্বাচনকে ঘিরে ভাবনা:

স্মৃতির পাতায় নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন -২০২১

ও সংসদীয় উপ-নির্বাচন (হবিগঞ্জ-১)- ২০১১

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহি উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ পারভেজ আলম চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন, হবিগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ সাদেকুল ইসলাম, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার দেবশ্রী দাস পার্লি, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজিজুর রহমানসহ ১৬ জানুয়ারী ২০২১ইং নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী সিনিয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পবন চন্দ্র বর্মন, বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ যথাক্রমে স্নিগ্ধা তালুকদার, মাসুদ রানা, ইফফাত আরা জামান উর্মি, আফিয়া আমীন পাপ্পা, আনিছুর রহমান খাঁন, শামছুদ্দিন মোঃ রেজাসহ আন্তরিকতা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনকারী সকল কর্মকর্তাকে জানাই প্রাণঢালা ভালবাসা ও অভিনন্দন।
বিশেষ করে ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব তিমিরপুর সেন্টারে দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদ মোহাম্মদ ইব্রাহীম, হবিগঞ্জের সহকারী সিনিয়র পুলিশ সুপার মোঃ সেলিম উদ্দিন, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও নবীগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ জাফর ইকবাল চৌধুরী, পুলিশ পরিদর্শক মোঃ নুরুল হক, জয়নগরে দায়িত্ব পালনকারী বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা, পুলিশ পরিদর্শক ইনাতগঞ্জ ফাড়ির ইনচার্জ মোঃ শামস উদ্দিন খান, নবীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন সরকার, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সকল সদস্যসহ সহকারী প্রিজাডিং সহ দায়িত্ব প্রাপ্ত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা।
নবীগঞ্জ পৌরসভার মধ্যে ৯নং ওয়ার্ডটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। উক্ত ওয়ার্ডে ২০১১ইং সালের পৌর নির্বাচনে কে বা কারা ১০০টি ব্যালট পেপার চুরি/ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সেই দুঃসহ স্মৃতিকে মনে করে ওয়ার্ডবাসীর মনে অনেক কষ্ট ছিল। তাই অত্র ওয়ার্ডে যারা দেশের হয়ে কাজ করেছেন দায়িত্ব সঠিকমত পালন করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
এই লেখাটি লিখতে গিয়ে মনে পড়ে গেল বিগত ২০১১ইং সালের উপ-নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. জিল্লুর রহমান, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটাণিং অফিসার সোনামনি চাকমা, নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও তৎকালীন নির্বাচনে প্রধান ম্যাজিস্টেট হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আক্তার হোসেন, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ নাজমুল হোসেন এর কথা। সারা বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে ছিল যেন কি হয়? সেই উপ-নির্বাচন বলিষ্টতার সাথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করায় নবীগঞ্জ উপজেলা ও বাহুবলবাসীসহ দেশ-বিদেশের গনতন্ত্রপ্রেমী জনতার মন জয় করেছিলেন।
এবারের নির্বাচনের দিনের কর্মকর্তাদের ভুমিকা প্রশংসিত হলেও আগের দিন ১৫ জানুয়ারী শুক্রবার ২০২১ইং রাত অনুমান রাত ৮ থেকে ১১টা পর্যন্ত যা ঘটেছে তা উল্লেখ করলে মনের মধ্যে যেন শান্তি পাব না। তাই বলা- অত্র ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী তার নিজ বাড়িতে অসহায় হতদরিদ্র ভোটারদের নিয়ে বিভিন্ন পন্থায় ও সুকৌশলে ডকুমেন্ট রেখে অনুমান ৫/৭ লক্ষ টাকা বিতরণ করেন। যা এলাকার ভোটার সহ সচেতন লোকজনের জানা রয়েছে। ওই বিষয়টি সর্ম্পকে জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটানিং অফিসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহ আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্তকর্তাদের জানানো হলেও এ বিষয়ে কার্যকর কোন ভুমিকা না নেওয়ায় আমি একজন ভোটার ও সচেতন মানুষ হিসেবে নিজেকে হতভাগা এবং দায়ি হিসেবে মনে করছি। কারন, চাইলে নিজেও কিছু করতে পারতাম কিন্তু আইন-শৃংখলা বাহিনী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রতি আস্থা রেখে এবং এলাকার শান্তি-শৃংখলার স্বার্থে নিজের হাতে দায়িত্ব তুলে নেই নি। তবে মনে হয়, একটি দুঃখ রয়ে গেল টাকার কাছে সততা ও স্বচ্ছতা হেরে গেল। দেশ-বিদেশের সকলের মনে আফসোস; কালো টাকা, সন্ত্রাস, মাদক সেবি ও অন্যায় কাজে সুবিধাভোগী চিহ্নিত চক্রের কুটকৌশল ও রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে সততা, বিশ^স্ততা ও ভদ্রতার পরাজয় হলো। নবীগঞ্জ শহরের ও প্রবাসী সচেতন সমাজের অনেক মানুষ ৯নং ওয়ার্ডের ফলাফলে হতবাক। সবারই এক মন্তব্য; এই ওয়ার্ডের জনগণ একজন ভদ্র, নম্র, শিক্ষিত সমাজপতির পরিবর্তে দিনদুপুরে নবীগঞ্জ বাজারে ছিনতাইকারীকে নির্বাচিত করল!
উক্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলাউদ্দিন সাহেবের অকান্ত পরিশ্রমে এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, গোষ্ঠি দ্বন্দ ভেঙ্গে সকল গোষ্টির মাঝে সম্প্রীতির ভাব সৃষ্ঠি হয়েছে। তিনি ৪ বার নির্বাচিত হয়েছেন, কোনবারই তিনি প্রতিপক্ষকে হেয় করে, কটাক্ষ করে কোন মন্তব্য করেছেন বা বিজয় মিছিল করে পরাজিত প্রার্থীর মনে কষ্ট দিয়েছেন বলে কেউই প্রমাণ দিতে পারবেনা। অথচ ১৬ জানুয়ারী শনিবার রাত অনুমান ৮ টায় নির্বাচনী আচরণ বিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর ফজল আহমদ চৌধুরীর লোকেরা কয়েকটি সাউন্ড বক্স নিয়ে দুটি ট্রাক (ফিক-আপ) ভর্তি মানুষ সহকারে বর্তমান কাউন্সিলর মোঃ আলাউদ্দিন তালুকদারের আপন ভাগিনা ও ভাতিজা এবং নবীগঞ্জ পৌর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুয়েল তালুকদার, শ্রমিক নেতা মোঃ আনকার মিয়া তালুকদার, ব্যবসায়ী মোঃ করছু মিয়া তালুকদারের বাড়ির সামনে এসে মিছিল সহকারে আতসবাজি (বোম) ফোঠানোর মাধ্যমে যে গোষ্ঠিতান্ত্রিক দাঙ্গা-হাঙ্গামার উস্কানি দিচ্ছেন তাতে ফজল চৌধুরী সাহেবের ব্যাপারে শান্তিপ্রিয় জনতার আশংকা বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে কিনা? নবনির্বাচিত কাউন্সিলরের ভাতিজা জাকির চৌধুরী আলাউদ্দিন সাহেব হিন্দুদের ও তাদের বাড়িতে হামলা করেছেন বলে ফেইসবুকে যে লেখালেখি করে যাচ্ছে, সত্যি আলাউদ্দিন সাহেব দাঙ্গাবাজ কিনা? তার বিচারও জনগণের কাছে পেশ করছি। এই উস্কানীকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনার সময় পাশের একটি সনাতনী ধর্মের বাড়ির টিন দিয়ে আটকানো সীমানা দেয়াল ভাংচুরের ঘটনাটি এই এলাকার জন্য এক অশনী সংকেত। শুরুতেই এই আচরণ সত্যিই খুব দুঃখজনক। এটি কোনভাবে আমাদের সমাজে গ্রহন যোগ্য নয় বলে মনে হয়। আমরা আলাউদ্দিন সাহেবের গড়া শিক্ষা, শান্তি, সম্প্রীতির এলাকাকে অশান্ত করার অপপ্রয়াস থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানাই। পাশাপাশি এলাকার শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার লক্ষ্যে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
লেখক:
মোঃ সেলিম তালুকদার
সাধারণ সম্পাদক :- নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাব।
প্রকাশক ও সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত), দৈনিক হবিগঞ্জ সময়।


     এই বিভাগের আরো খবর