,

বাজেটে গাড়ির শুল্ক-কর যৌক্তিক চায় বারভিডা

সময় ডেস্ক ॥ দেশে গাড়ির বাজার সম্প্রসারণে নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্ক-কর বৈষম্য ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে যৌক্তিক করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স এসোসিয়েশন (বারভিডা)। এ ছাড়া দেশে গাড়ি নির্মাণ শিল্প স্থাপনের পাশাপাশি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির প্রক্রিয়াও স্বাভাবিক রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ লক্ষ্যে যতদ্রুত সম্ভব দেশে একটি বাস্তবায়নযোগ্য অটোমোবাইল শিল্প নীতিমালা করার তাগিদ দিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট নেতারা। রাজধানীর বিজয়নগরে বুধবার বারভিডা কার্যালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আবদুল হক এসব দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা প্রেসিডেন্ট বলেন, বারভিডা সবসময়ই দেশে খাতভিত্তিক নতুন শিল্প স্থাপনের পক্ষে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের মোটরকার বা বাংলাদেশের ‘ন্যাশনাল কার’ অনেকের মতো বারভিডার জন্যও অনেক গর্বের বিষয় হবে। তবে যে কোন শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট খাতের বিদ্যমান শিল্পগুলোর অবস্থান, বিশ্বের অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা ও দেশের বাস্তবতাকে বিবেচনায় নেয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে দেশে দীর্ঘ ৪০ বছরের প্রতিষ্ঠিত রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি খাত যাতে কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সরকারকে সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়েছে বারভিডা। সেই লক্ষে বারভিডা একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দিয়ে নীতিমালাটির সম্ভাব্যতা ও কার্যকারিতা যাচাইয়ের আহ্বান জানায়। সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা নেতারা জানান, কয়েক হাজার কোটি টাকা স্থানীয় বিনিয়োগ, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান ও বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে বারভিডা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বারভিডার আমদানিকৃত জাপানের পরিবেশবান্ধব এবং রি-সেল ভ্যালু সম্পন্ন গাড়িগুলো এ দেশের ক্রেতাদেরও প্রথম পছন্দ। ক্রেতার পছন্দ উপেক্ষা করে দেশিয় গাড়ি নির্মাণের নামে দেশে যাতে কোন স্ক্রু ড্রাইভিং শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ না নেয়া হয় সে বিষয়ে বারভিডা আশংকা প্রকাশ করেছে। বারভিডা প্রেসিডেন্ট জানান, জাইকার মত অনুযায়ী গাড়ির অভ্যন্তরীণ বাজার ১ লাখ ইউনিট হলে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। অথচ বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার ইউনিট গাড়ি বিক্রি হয়। সুতরাং স্থানীয় উৎপাদন ও রপ্তানির আগে দেশের গাড়ির বাজার সম্প্রসারণে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নতুন এবং পুরনো গাড়ির শুল্ক-কর যৌক্তিকীকরণ অত্যন্ত জরুরি। সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা প্রেসিডেন্ট গাড়ি আমদানিতে অবচয় সুবিধা বৃদ্ধি, হাইব্রিড ও ফসিলফুয়েল চালিত গাড়ির সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিন্যাস এবং মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের আবেদন জানান। অবচয় সুবিধা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আব্দুল হক বলেন, বর্তমানে ইয়োলো বুকে উল্লিখিত সব কোড মডেলের গড় মূল্য থেকে কোন ডিলার কমিশন এবং জাপানের স্থানীয় কর বিয়োজন ছাড়া বছরভিত্তিক অবচয় প্রদান করা হচ্ছে। যা কাস্টমস আইনের পরিপন্থি। আমদানি নীতি অনুযায়ী, পুরো ৫ বছরের অবচয় সুবিধা প্রাপ্তি একটি মৌলিক অধিকার। বারভিডাকে এ সুযোগ দিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্ক-কর বৈষম্যের কারণে গত কয়েক বছর ধরেই রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানি উল্লেযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও হোঁচট খেয়েছে। এদিকে এক বছর ধরে চলমান করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকারের দেয়া প্রণোদনা প্যাকেজে একটি ট্রেডিং সংগঠন হিসেবে বারভিডা কোনো ঋণ সুবিধা পায়নি। চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার পরিবহনে বন্দর ভাড়ায় ছাড় দেয়া হলেও বারভিডা বারবার আবেদন করেও করোনার সাধারণ ছুটিকালীন সময়ের জন্য পোর্ট চার্জ মওকুফ পায়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহা. সাইফুল ইসলাম সম্রাট বক্তব্য রাখেন। এ সময় বারভিডার ভাইস প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন মিন্টু, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান এবং কার্যনির্বাহী সদস্য আবু হোসেন ভূইয়া রানু, ইউনূছ আলী উপস্থিত ছিলেন।


     এই বিভাগের আরো খবর