,

জালিয়াতির মাধ্যমে জামিন করানোর অভিযোগ! হবিগঞ্জ জেলা বার থেকে আইনজীবি বহিস্কার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ জজকোর্টে তথ্যগোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে জামিন করানোর অভিযোগে আজীবন জেলা বার থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো অ্যাডভোকেট কুতুব উদ্দিন জুয়েলকে। গতকাল বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল মনছুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, দুপুরে জেলা বারের সম্মেলন কক্ষে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অ্যাডভোকেট কুতুব উদ্দিন জুয়েলকে তথ্য জালিয়াতির ঘটনায় জেলা বার থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বারের জরুরি সভায় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামছুল হকসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে আদালতকে বিভ্রান্ত করে দুই মাদক ব্যবসায়ীর জামিন মঞ্জুর করিয়েছিলেন কুতুব উদ্দিন জুয়েল নামে ওই আইনজীবী। ৮ এপ্রিলের ঘটনাকে তিনি অবলীলায় ৯ ফেব্রুয়ারি বলে চালিয়ে দিয়েছেন তিনি। আইনজীবীর এমন কাণ্ড জানাজানি হওয়ার পর থেকেই আদালত পাড়ায় শুরু হয় তোলপাড়। এ ছাড়া ওই আইনজীবি অপর এক তরুণ আইনজীবি আশরাফুল ইসলামের একটি মামলা হাইকোর্টে পেন্ডিং রেখে তথ্যগোপন করে নিম্ন আদালতে জামিন করান। এ ঘটনাটিও ওই আইনজীবি জুয়েলের বিরুদ্ধে বারে অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত সূত্র জানায়, গত ৮ এপ্রিল মাধবপুর উপজেলার উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর এলাকা থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ মামুন ভূইয়া ও নবীর হোসেন নামে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের মাদক আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২৭ মে কুতুব উদ্দিন জুয়েল (আসামিদের দ্বিতীয় আইনজীবী) নামে আইনজীবী ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ নাসিম রেজার আদালতে তাদের জামিন প্রার্থনা করেন। এ সময় তিনি আদালতকে জানান, আসামিরা ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে হাজতবাসে রয়েছেন। আদালত তখন হাজতবাসের সময় বিবেচনা করে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনপ্রাপ্ত আসামি মামুন ভূইয়া নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার গোয়ালদী গ্রামের হাবিবুর রহমান ভূইয়ার ছেলে ও অপর আসামি নবীর হোসেন নরসিংদীর জেলার মাধবদী থানার মৃত নুর হোসেনের ছেলে। এ বিষয়ে আসামিদের প্রথম আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, গত ১২ মে শুধুমাত্র আসামি মামুন ভূইয়ার জামিন প্রার্থনা করি আমি। এ সময় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পবন চন্দ্র বর্মন তা নামঞ্জুর করেন। গত ২৩ মে আসামিদের স্বজনরা আমার কাছ থেকে মামলাটি অ্যাডভোকেট কুতুব উদ্দিন জুয়েলের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে ২৭ মে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিস কেইস শুনানির মাধ্যমে আসামিদের জামিন মঞ্জুর করানো হয়। জামিন আবেদনে তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়, ‘আসামিরা গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে হাজতবাসে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ১২ মে তারিখের না মঞ্জুরের নকল দিয়েই নাকি মিস কেইস করা হয়েছে। কিন্তু ১২ মে আমি শুধুমাত্র একজনের জামিন প্রার্থনা করেছিলাম। দুইজনের জন্য সেই নকল দিয়ে মিস কেইস করার কোনো সুযোগ থাকার কথা নয়। এখানে স্পষ্ট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।
অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট কুতুব উদ্দিন জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মূল নথিতে আসামিদের হাজতবাসের মেয়াদ দুই মাস ছিল, আমি সেই সময়ই উল্লেখ করেছি। কোনো ভুয়া তথ্য দেইনি। আদালত হাজতবাস বিবেচনা করেই জামিন মঞ্জুর করেছে।


     এই বিভাগের আরো খবর