,

টমটমের সিরিয়াল নিয়ে ঝগড়ার কারণেই হত্যা করা হয় তাজুলকে

সংবাদদাতা ॥ চুনারুঘটে টমটম চালক মো. তাজুল ইসলাম (১৪) হতার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মিজানুর রহমান নয়ন (১৯) ও আফিল উদ্দিন (৩০)। জবানবন্দিতে তারা তাজুল হত্যার দায় স্বীকার করেন। জবানবন্দিতে তারা জানান, অফিল উদ্দিনের সাথে টমটম চালানোর সিরিয়াল নিয়ে তাজুলের ঝগড়া হয়। এরপর আফিল উদ্দিন তাকে হতার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী অফিসের সহযোগী মিজান চুনারুঘাট দক্ষিণ বাজারের স্ট্যান্ড থেকে তাজুল ইসলামকে চান্দপুর বাজারের কথা বলে ভাড়া করে নিয়ে যান। মিজান তাজুলকে বলেন তার টমটমটি বিকল হয়েছে। গিলানী চা বাগানে তার টমটমটি টেনে আনার কথা বলে তাজুলকে ওখানে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গলায় রশি বেঁধে আরও কয়েকজন সহযোগীদের নিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে তাজুল ইসলাম (১৪) কে হত্যা করেন অফিল। পরে তার টমটমের ব্যাটারি খুলে নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ একটি দোকানে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করে মিজানকে ১৯ হাজার টাকা প্রদান করেন। গত রবিবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক ১৬৪ ধারায় আসামি মিজানের জবানবন্দি গ্রহন করেন। পরে রাত ৮টায় তাকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। আটককৃতরা হলেন- উপজেলার কালিচং এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে মিজানুর রহমান নয়ন (১৯) ও সদর ইউনিয়নের গোলগাল গ্রামের মৃত মস্তই মিয়ার ছেলে আফিল উদ্দিন (৩০) । আফিল উদ্দিন বর্তমানে পৌরশহরের চন্দনা এলাকায় বসবাস করছেন। উল্লেখ্য গত ২৫ জুন চুনারুঘাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মো: আলফু মিয়ার ছেলে মো. তাজুল ইসলাম (১৪) ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। রাতে বাড়ি না ফেরায় তার পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন ২৬ জুন জানতে পারেন গিলানী চা-বাগানের অভ্যান্তরে গলায় রশি পেছানো অবস্থায় তাজুলের লাশ পড়ে রয়েছে। স্থানীয়রা চুনারুঘাট থানা পুলিশকে খবর দিলে চুনারুঘাট থানার ওসি মোঃ আলী আশরাফ লাশটি উদ্ধার করেন। পরে এসআই আব্দুল মোতালেব সুরতহাল করে লাশটি হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করেন। ২৬ জুন দুপুরে লাশের পরিচয় পাওয়া গেলে লাশটি স্বজনদের কাছে হস্থান্তর করা হয়। এরপর তার পিতা আলফু মিয়া বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের ৭ দিনের মধ্যে হত্যার রহস্য উন্মোচন ও আসামীদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটক আফিল উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আনেদন করা হয়েছে। চালক তাজুলের পারিবারিক সুত্র জানায়, আফিল উদ্দিন কিছুদিন টমটমের সিরিয়াল ম্যান এর দায়িত্বপালন করাকালে সিরিয়াল নিয়ে ঘটনার প্রায় মাস খানেক পুর্বে আফিল উদ্দিনের সাথে চালক তাজুলের বাকবিতন্ডা হয়। এনিয়ে বিচার শালিশও হয়েছে। এরপর থেকে তাজুলকে হত্যা করতে পরিকল্পনা করে আফিল উদ্দিন। তাজুলের পিতা আলফু মিয়া ছেলে হত্যায় জড়িতদের বিচার চান।


     এই বিভাগের আরো খবর