,

নবীগঞ্জ পৌরসভার ফেলা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিবপাশা-নোয়াপাড়াবাসী

সলিল বরণ দাশ : নবীগঞ্জ পৌরসভায় বর্জ্য নিষ্কাশনে অব্যবস্থাপনার ফলে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনায় পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে। পৌর শহরের ব্যবসায়ী ও বাসাবাড়ির নিত্যদিনের ময়লা-আবর্জনা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শাখাবরাক খালসহ যেখানে-সেখানে ফেলায় শহরের পরিবশে নোংরা হচ্ছে। এ সব বর্জ্য অপসারণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ময়লা আর্বজনার গন্ধে অতিষ্ঠ নবীগঞ্জ পৌরবাসী। স্থানীয়রা জানান, নবগঠিত পৌরসভায় জনবল কাঠামোসহ নানা সংকটে শহর পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শহরের প্রতিদিনের ময়লা অপসারণের কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় দুর্গন্ধে বাতাস দূষিত হয়ে পড়ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে শাখাবরাক খালে পানিতে প্রচুর কচুরিপানা জমেছে। কচুরিপানার কারনে খালের মধ্যে ফেলা আর্বজনা পানির তোড়ে ভেসে যেতে না পেরে জমে থাকা আর্বজনা পচেঁ দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এছাড়া কোরবানীর পশুর বর্জ্য শাখাবরাক খাল সহ যত্রতত্র ফেলার কারণে তা পচেঁ দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দুর্গন্ধে বিশেষ করে শিবপাশা, আনমনু ও নোয়াপাড়ার মানুষ, শিার্থী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতগামী মানুষ ভোগান্তির শিকার বেশি হচ্ছেন। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ পৌরসভায় এখনও সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। পৌরসভার সাধারণ মানুষের দাবি, ময়লা ফেলার ডাম্পিং গ্রাউন্ড (ময়লা ফেলার ভাগাড়) না থাকার কারণে পৌরসভার বেশিরভাগ ময়লাই ফেলা হচ্ছে শাখাবরাক খালসহ যত্রতত্র। যে কারণে ময়লা পচেঁ দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তবে, পৌরসভা পরিচ্ছন্নকর্মীদের দাবি তারা নির্দিষ্ট সময়েই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করেন। সরেজমিন দেখা গেছে, নবীগঞ্জ পৌরসভার শিবপাশা ও নোয়াপাড়ার পাশ দিয়ে প্রবাহমান শাখাবরাক খালের দুই পাশে, মধ্য বাজার সংলগ্ন তোহা বাজারের পাশে, শহরের হবিগঞ্জ রোডের সিএনজি ষ্ট্যান্ডের পাশে, শেরপুর বাস ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন শাখাবরাক খালে, প্রানী সম্পদ অফিসের সম্মুখে ও আনমনু রাস্তার মুখে অস্থায়ীভাবে ময়লার স্থুপ করে রাখছেন পরিচ্ছন্নকর্মীরা। ব”ষ্টির পানিতে এ সব ময়লার স্থপ যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে মশা-মাছি সৃষ্টি হচ্ছে। শহরের তোহা বাজারের পাশে খালে ময়লার ভাগাড় ও কচুরিপানার কারণে নৌযান চলাচল অনেক দিন আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। অপরদিকে শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া শাখাবরাক খালে কচুরিপানার কারণে খালে ফেলা ময়লার স্তূপ জমে থাকার কারণে পুরো শহরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। দুর্গন্ধের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না ব্যবসায়ী ও পথচারীরা। এ সব ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে না ফেলার কারণে গন্ধ আরও তীব্রভাবে ছড়িয়ে পড়ছে শহরজুড়ে। নোয়াপাড়া জামে মসজিদের সাবেক সভাপতি মোঃ মরম আলী বলেন, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধের কারণে পৌর এলাকার নোয়াপাড়া, আনমনু ও শিবপাশা এলাকার মানুষ এখন অতিষ্ঠ। রাস্তা-ঘাটে যত্রতত্র ময়লা ও আবর্জনা ফেলায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, পৌর শহর থেকে দূরে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা মজুদ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা জরুরি। নবীগঞ্জ পৌরসভার পরিছন্নতা পরিদর্শক সুকেশ চক্রবর্ত্তী জানান, বাসা-বাড়ির ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার রাখতে শ্রমিক ও সুইপার রয়েছে মোট ১৮ জন। এ ছাড়া ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে নিতে ১টি ট্রাক ও ০৬টি ছোট ভ্যানগাড়ি রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের চাহিদার চেয়ে ১২ জন কর্মচারী ও ০৪টি ভ্যান কম রয়েছে। অপরদিকে, যানবাহন কম থাকায় ও আধুনিক যানবাহনের অভাবে শহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী জানান, ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে রাখার জন্য পৌরশহরের ময়লা-আবর্জনা ডাম্পিং করতে চাই। কিন্তুজমি না পাওয়ায় এটি সম্ভব হচ্ছে না। শহরের রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও আবর্জনা ডাম্পিং করতে না পারায় পৌরবাসী দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। আমি ডাম্পিং জোনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি চেয়ে আসছি। কিন্তুনানা জটিলতায় এখন পর্যন্ত তা পাইনি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে জমি পাওয়ার চেষ্টা চলছে। আশা করি জায়গাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে কিছু দিনের মধ্যে ডাম্পিং জোন নির্মাণ করা হবে। শহরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর