,

হবিগঞ্জে নদী দখল, শিল্পবর্জ্য দূষণ ও পরিবেশ সংকট রোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের পাহাড়-টিলা হাওর-বন-নদী কিছুই ভালো নেই। জেলার বিভিন্ন স্থানে অনুমোদনহীন ভাবে শিল্প-কারখানা স্থাপন হচ্ছে। কারখানাগুলোর বর্জ্য ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে খাল-বিল-নদীতে। কিছুদিন পূর্বে পুরাতন খোয়াই নদীর দখল উচ্ছেদে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। অজ্ঞাত কারণে এটা বন্ধ আছে। হবিগঞ্জ শহর বর্তমানে আবর্জনা ও দুর্গন্ধের শহরে পরিণত হয়েছে। তাই জেলাবাসীর মৌলিক নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের প্রয়োজনে, পুরাতন খোয়াই নদী দখল উচ্ছেদ, শিল্পবর্জ্য দূষণ রোধসহ সার্বিক পরিবেশগত সংকট নিরসনে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখা আয়োজিত “হবিগঞ্জের নদী দখল, শিল্পবর্জ্য দূষণ ও পরিবেশ সংকট রোধ” বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাপা জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক মোঃ ইকরামুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী। সভায় বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত ছিলেন, বাপা হবিগঞ্জের সহ-সভাপতি তাহমিনা বেগম গিনি, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক জনপ্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী মমিন,হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বাপা হবিগঞ্জের কোষাধ্যক্ষ শোয়েব চৌধুরী, সাবেক জনপ্রতিনিধি ও বাপা নির্বাহী সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমান, রোটারিয়ান তবারক আলী লস্কর, বাপা যুগ্ম সম্পাদক হারুন সিদ্দিকী, সদস্য এড. বিজন বিহারী দাস, আব্দুল কাইয়ুম, মাহমুদ ইকবাল সুমন, ডা: আলী আহসান চৌধুরী পিন্টু, এড. শায়লা খান, আমিনুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, আবিদুর রহমান, হৃদয় আহমেদ, মুসলিম উদ্দিন চৌধুরী, শামীম আহমেদ প্রমুখ। সভায় মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, হবিগঞ্জের ময়লাগুলো যত্রতত্র খেলা হয়। আমরা ডাম্পিং স্টেশন এর জন্য একটি জায়গা ঠিক করেছি। পুরাতন খোয়াই সংস্কার নিয়ে মন্ত্রণালয়ে লিখেছি। আশাকরি বরাদ্দ আসবে। সুতাং নদীর দূষণরোধ নিয়েও আমরা যথাসাধ্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, পাহাড় টিলা হাওর বন নদী সব কিছুই ভাল রাখতে হবে।আমরা উন্নয়ন করবো তবে পরিবেশকে তি করে নয়। জেলা প্রশাসক এখানে এসেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কয়েকটা জায়গা পরিদর্শন করেছেন, আমরা চেষ্টা করছি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার। পুরাতন খোয়াই নদী থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হয়েছিল, আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। আশা করছি হবিগঞ্জের সমস্যাগুলো সমাধান হবে। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে। তোফাজ্জল সোহেল, জেলার নদ-নদী, পাহাড়, টিলা, হাওর, পুকুর, জলাশয়, শিল্পদুষন ইত্যাদির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের নদীগুলো সুস্থ নেই। প্রকৃত অর্থে নদী, পুকুর, জলাশয়গুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। খোয়াই, পুরাতন খোয়াই, সুতাং, সোনাই নদীর উপর চলছে বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার। একদিকে চলছে নদীর বুক থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন, দখল, অন্যদিকে শিল্পের নামে কলকারখানার বর্জ্য ফেলে দূষিত করা হচ্ছে নদীকে। এই অনাকাঙ্তি অন্যায় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আশঙ্কা করছি, এভাবে চলতে থাকলে হবিগঞ্জে শুধু পরিবেশ বিপর্যয়ই নয়, ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ও নেমে আসবে। তাই নদী, পুকুর, জলাশয় এর সুস্থ স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই।


     এই বিভাগের আরো খবর