,

নবীগঞ্জে গর্ভ পরীক্ষা করাতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ :: আদালতে মামলা :: সিআইডিকে নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার : নবীগঞ্জ উপজেলাসহ সিলেটের চারটি জেলার মিলনস্থল শেরপুর। এখানে ঢাকা, সিলেট, মৌলভীবাজার সহ বিভিন্ন স্থানের মানুষের আনাগুনা রয়েছে।
মামলায় বিবরণ ও বাদী সূত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল গুচ্ছ গ্রামের মৃত আব্দুর নুরের পুত্র মোঃ মুহিবুর রহমান তার স্ত্রী বাবলী বেগম (২০)কে সৌদি আরব যাওয়ার জন্য শেরপুরস্থ আল করিম ম্যানশন (সিটি কমিউনিটি সেন্টার) এর নিচ তলায় অবস্থিত সানরাইজ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গর্ভ চেকআপ করানোর জন্য গত বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেখানে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত জনৈক রাজু নামের এক নামধারী চিকিৎসকে বিষয়টি বললে সে বলে আমিই চিকিৎসক, তুমি বলো কি সমস্যা। এমন কথা শুনে তারা তার কাছে বিদেশ ও গর্ভপাতের বিষয়টি খুলে বলে। এতে ডাক্তার স্বামীকে বলে আমি চিকিৎসা করে দিচ্ছি তুমি এখানে বস। আর কেউ খোঁজে আসলে বলবে ভিতরে চিকিৎসা করছি। এ কথা বলার পর ঐ ডাক্তার তার স্বামীকে বাহিরে রেখে স্ত্রীকে একটি রোমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যাপারে স্বামী মুহিবুর বলেন, গর্ভ চেকআপ করাতে এসে আমার বউকে ঐ ডাক্তার কিভাবে ধর্ষণ করলো? আমার সাদা মাটা বউয়ের যদি এই সর্বনাশ করতে পারে তাহলে না জানি আরো কতো মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করেছে! চেকাআপের কথা বলে প্রায় ২৫/৩০ মিনিট পর চিকিৎসক আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঐ রোম থেকে বাহির হয়। বাহির হওয়া মাত্রই আমার স্ত্রী আমাকে জড়িয়ে ধরে কাদঁতে কাদঁতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ঐ সময় চিকিৎসক তার স্বামীকে বলে ওর বয়স কম, ওর হরমুনের সমস্যা আছে এবং তার বয়সও কম। বাড়িতে গেলে ঠিক হয়ে যাবে, আমি ঔষধ লিখে দিচ্ছি। তুমি একটি রিক্সায় দিয়ে ওকে নিয়ে যান। চিকিৎসকের কথা শুনে স্বামী তার স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে নিয়ে যাও। বাড়িতে আশার পর তার স্ত্রী বাবলীর জ্ঞাণ ফিরে আসে। ২/১ ঘন্টা পর বাবলী তার স্বামী মুহিবুরকে বলে তুমি আমাকে কোথায় নিয়ে গেছলায়। স্বামী বলে কেন? ডাক্তারের কাছে তো নিয়ে গেলাম? তোর কি হয়েছে? এ সময় স্ত্রী তার স্বামীকে বলে ঐ ডাক্তার আমার ডাক্তারী না করে উল্টো আমার হা, পা ও মূখ বেধেঁ জোর পূর্বক ধর্ষণ করেছে। এমন কথা শুনে আমি শেরপুর এলাকার লোকজনসহ স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, বিভিন্ন রাজনৈতিকনেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের জানাই। পরে শেরপুর পুলিশ, নবীগঞ্জ থানা ও মৌলভীবাজার সদর থানা পুলিশকেও এ বিষয়টি অবগত করি। কিন্তু সবাইকে জানানোর পর শেরপুরে এক সাংবাদিক ভাই আমাকে ফোন করে বলেন, যা হয়েছে তা বাদ দিয়ে দাও, ওরা তুমাকে ৫০ হাজার টাকা দিবেন। উনার এমন প্রস্তাব শুনে আমি অবাক হয়ে গেছি এবং না করে দিয়েছি। অবশেষে সিলেট র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যালিয়ান র‌্যাব-৯ কে বিষয়টি জানালে শ্রীমঙ্গল র‌্যাব ও মৌলভীবাজার সদর থানা পুলিশ হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে দেখতে আসেন এবং লিখে নিয়ে যায়। ঘটনার ১০ দিন অবিবাহিত হওয়ার পর স্থানীয় বা প্রশাসনিক ভাবে ধর্ষনের কোন বিচার না পেয়ে তার স্ত্রীকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগে চিকিৎসা শেষে গত বৃহস্পতিবার ২২ সেপ্টেম্বর ধর্ষীতা বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সদর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুানাল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এ ঘটনার দেশ-বিদেশে তুলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় সচেতন মহলের লোকজন দাবী করে বলেন, আপরাধী যেই হোক না কেন সঠিক তদন্ত করে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর