,

শায়েস্তাগঞ্জে টিনের ঘরেই চলছে দেড় লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা

স্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে টিনের ঘরেই চলছে দেড় লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রস্তাবিত ৫০ শয্যার ভবন ৫ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি। এতে কোনো রকমে চিকিৎসা কার্যক্রম চললেও ভোগান্তির শেষ নেই এলাকাবাসীর। তবে জায়গা অধিগ্রহণ না হওয়ায় ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা যায়নি বলে জানা গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন তত্ত্বাবধায়ক ও ৪ জন মেডিকেল কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হলেও তাঁরা দায়িত্ব পালন করছেন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তবে ওই কেন্দ্রে রোগীর শয্যা, চিকিৎসা সামগ্রী ও নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ না থাকায় রোগীর সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবিত ৫০ শয্যা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ মিলে মোট ৪৭টি পদের প্রস্তাব করা হয়। এর মধ্যে ৬ মাসের মধ্যে নতুন তত্ত্বাবধায়ক ও ৪ জন মেডিকেল কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এ উপজেলার আয়তন প্রায় সাড়ে ৩৯ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে রয়েছে একটি পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়ন। সাম্প্রতিক সময়ে শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠায় ব্যস্ততম এলাকা হিসেবে মানুষের পদচারণায় মুখরিত উপজেলাটি। দেড় লক্ষাধিক মানুষের জন্য পৌরসভার এক একর জমির ওপর অবস্থিত শায়েস্তাগঞ্জ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলছে কার্যক্রম। উপজেলার কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হলে উপজেলা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক সেবা দেওয়া হয়। তবে গুরুতর হলে জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা।
চিকিৎসা নিতে আসা রিমা আক্তার বলেন, ‘পেটে ব্যথা নিয়ে এখানে এসেছি, তবে শয্যা না থাকায় ভর্তি করছেন না ডাক্তার। যে কারণে জেলা সদর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম সবুজ বলেন, ‘আমরা শায়েস্তাগঞ্জবাসী দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। সামান্য অসুস্থ হলেই জেলা সদরে যেতে হয়।’ সাধারণ মানুষের চিকিৎসার সুবিধার্থে দ্রুত ৫০ শয্যার ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
চিকিৎসকরা জানান, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ থাকলে প্রতিদিন গড়ে দেড়শ থেকে দুইশ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে ওষুধ না থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের।
মেডিকেল কর্মকর্তা ফাতেমা আক্তার নিশি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ জন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে শয্যা ও চিকিৎসা-যন্ত্রপাতি না থাকায় গুরুতর রোগীদের জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ওষুধের চাহিদাপত্র গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী সিভিল সার্জন মোখলেছুর রহমান উজ্জ্বল জানান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঘরটি সম্প্রসারণ করা হবে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়নি, তবে চেষ্টা চলছে।


     এই বিভাগের আরো খবর