,

বাপা প্রতিনিধিদলকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে দেয়নি হাতিমারা চা বাগান কর্তৃপক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার : সম্প্রতি হবিগঞ্জ জেলার চুনারঘাট উপজেলার হাতিমারা চা বাগানে প্রায় তিন হেক্টর জায়গার গাছ কেটে আগুন লাগিয়ে দেয় বাগান কর্তৃপক্ষ। এতে জীবজন্তু পুড়ে মারা যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাতীয়, স্থানীয় পত্র-পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় এমন সংবাদ দেখে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)র পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল ৩০ জানুয়ারি সোমবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে হাতিমারা চা বাগানে যান।
বাগানের সীমানা গেটে ঢুকার সময় প্রতিনিধি দলের বহনকারী গাড়িটি আটকে দেয়া হয়। এ সময় “লিটন বাবু” নামে একজন টিলা বাবু আসেন এবং তিনি বাগান ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থাপক মো: মইন উদ্দিন এর সেল ফোন নাম্বার বাপা প্রতিনিধি দলকে দেন। বাপা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জনাব আব্দুল করিম কিম বাগান ব্যবস্থাপকের সঙ্গে সেলফোনে কথা বললে, তিনি তার কার্যালয়ে যেতে বলেন। প্রতিনিধিদলকে টিলাবাবু বাগান ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে নিয়ে যান। প্রতিনিধিদল নিজেদের পরিচয় দিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা বলেন। এ সময় বাগানের ব্যবস্থাপক মো: মইন উদ্দিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি দিবেন বলে সেলফোন হাতে নিয়ে কথা বলতে বলতে বেরিয়ে যান। দীর্ঘ সময় বাপা প্রতিনিধি দলকে তার কার্যালয়ে বসিয়ে রেখে ব্যবস্থাপক মো: মইন উদ্দিন জানান বাপা প্রতিনিধিদলকে ঘটনাস্থলে যেতে দেওয়া হবেনা কারণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়া যায়নি।
বাপা এর পক্ষ থেকে বাগানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে ব্যবস্থাপক মো: মইন উদ্দিন জেনারেল ম্যানেজার এফ এ শাহীন এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন কিন্তু তিনি জেনারেল ম্যানেজারের সেলফোন নাম্বার কিংবা অবস্থান জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। প্রায় সন্ধা হয়ে গেলে বাধ্য হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন না করে বাপা প্রতিনিধি দলকে ফিরে আসতে হয়।
বাপা প্রতিনিধি দল মনে করে, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে বাধা দেওয়ায় প্রমাণ করে সংবাদপত্রে যেমন সংবাদ এসেছে তেমনি করে বাগান কর্তৃপক্ষ গাছ কেটে, আগুন লাগিয়ে জীবজন্তু পুড়িয়ে পরিবেশ- প্রতিবেশ বিধ্বংসী কর্মযজ্ঞ করছে। যে জন্য ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে হাতিমারা চা বাগান কর্তৃপক্ষ বাপা প্রতিনিধিদলকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে দেয়নি।
দেশের অন্যতম বৃহত্তম বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেমা-কালেঙ্গার পাশে অবস্থিত হাতিমারা চা বাগানের যে স্থানটিতে গাছ কেটে আগুন লাগিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে সেই গির্জাঘর এলাকাটি বন্য প্রাণীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কয়েক প্রজাতির বানর, হনুমান মায়া হরিণ, শুকরসহ নানা প্রজাতির জীবজন্তুর আবাসস্থল ছিল। গাছ কেটে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার কারণে বন্যপ্রাণী, পরিবেশ-প্রতিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এহেন পরিবেশ বিধ্বংসী, হীন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাপা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, কোষাধ্যক্ষ শোয়েব চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য আহসানুল হক সুজা, অ্যাডভোকেট শামীম পারভিন, চৌধুরী মাসুদ আলী ফরহাদ, মিন্টু দেশোয়ারা।


     এই বিভাগের আরো খবর