,

নবীগঞ্জে ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়

উত্তম কুমার পাল হিমেল/জাবেদ তালুকদার : নবীগঞ্জে শেষ মুহুর্তে ঈদের আমেজে সবাই এখন ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্থ। মাত্র ৪ দিন পরেই ঈদ, তাই পরিবার এবং প্রিয়জনকে নিয়ে পছন্দের পোশাক পরে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এদিক ওদিক ঘুরে কেনাকাটা করছেন। নবীগঞ্জের প্রতিটি কাপড়ের শপ, বিপনী বিতান এবং কসমেটিক্স দোকান গুলো ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়ে মুখরিত। উচ্চবৃত্ত, মধ্যবৃত্ত ও নিন্মবৃত্ত সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এখন ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্থ।
সরেজমিনে বিপনীবিতানগুলো ঘুরে দেখা গেছে এবারের ঈদে মহিলা ও তরুনীদের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে নারিয়া ড্রেস, ইন্ডিয়ান বাজিরা মস্তানী, মিস সুইটি, মিস ম্যাচিং, লং ব্রাউন, জালহা, প্রেম রতন, টাঙ্গাইল, হাফ সিল্ক, জামদানী, শাড়ী, ইন্ডিয়ান ত্রিপিছ, ইন্ডিয়ান সুতি শাড়ী, জরজেট ও টাঙ্গাইল শাড়ী এবং পুরুষদের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে প্যান্ট ক্ল্যাশ অব ক্যান, বাজুরঙ্গী, আরমানি ও ডেসিম, জামিম, চায়না শার্ট, থাইপ্যান্ট, সর্ট পাঞ্জাবী, ফতুয়া, চেক পুল ও হাফসার্ট।
নবীগঞ্জ শহরের গোল্ডেপ্লাজার লাবনী ফ্যাশন, ডিজাইন টাচ, জুই কসমেটিক্স, মধ্যবাজারের কাশেম ক্লথ ষ্টোর, রেনেসা ক্লথ স্টোর, শেরপুর সড়কের সেন্টাল প্লাজায় লেডিস এন্ড জেন্টস ফ্যাশন কর্নার, চৌদ্ধহাজারী মার্কেটের ফ্যাশন ষ্টোর, নুরানী মার্কেটের তানিম ক্লথ স্টোর, মিম্বর টাওয়ারে রছ, রাজা কমপ্রেক্সের অপরাজিতা কসমেটিক্সসহ শহরের অন্যান্য বিপনী বিতানগুলোতে এখন প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভীড় চলতে থাকে। বিপনী বিতানের পাশাপাশি পোষাক তৈরীর জন্য টেইলার্স দোকান গুলোতে ও ভীড় দেখা গেছে।
তরুনী ও মহিলাদের আইটেমের মধ্যে নারিয়া ড্রেস, ইন্ডিয়ান শাড়ী, মাজাক কালী শাড়ী, দাবাং ত্রিপিছ এবং পুরুষদের আইটেমের মধ্যে চায়না সার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবী-পাজামাসহ গার্মেন্টেস এর পন্য বেশী বিক্রি হচ্ছে।
এ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে, রেনেসা ক্লথ স্টোরের পরিচালক, সাইদুল হক চৌধুরী বলেন, ঈদের মার্কেটে বেচাকেনা মোটামুটি ভাল। তবে বিদেশী রেমিটেন্স কম আসায় এবং প্রবাসীরা দেশে কম আসায় বেচাকেনা আশানুরুপ হয়নি। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারনে ব্যবসায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।
কসমেটিক সামগ্রীর দোকান পপি ভ্যারাইটিজ সেন্টারের পরিচালক প্রমথ চক্রবর্তী বেনু জানান, এ বছরের ঈদে বাজারে মহিলা ও তরুনীদের প্রথম পছন্দ সিটি গোল্ডের গলার হাড়, হাতের ছুড়ি এবং প্রসাধন সামগ্রী হিসাবে মেহেদী বিক্রি হচ্ছে বেশী। মধ্য বাজারের শর্মী ভেরাইটিজ এর সত্ত্বাধিকারী শিবু পাল বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বেচাকেনা ভালই হচ্ছে। আগামী ২/১ দিন বেচাবিক্রি আরো ভাল হবে। ঘোষ মিষ্টান্ন ভান্ডরের পরিচালক অঞ্জন ঘোষ বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এ বছর অস্যান্য বছরের তুলনায় ইফতারী সামগ্রী ও দই মিষ্টি বেশি বিক্রি হচ্ছে।
নবীগঞ্জ বাজারে ঈদের মার্কেটে আসা স্কুল শিক্ষিকা রাশিদা বেগম জানান, নারিয়া ড্রেস, আনরেডি থ্রি-পিছ পছন্দের তালিকায় থাকলেও দাম বেশী হওয়ায় বাজেটে কতটুকু পোষাবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মোঃ মহসিন আহমদ জানান, ঢাকা-সিলেটের মত নবীগঞ্জে ও এখন চাহিদামত পোশাক পাওয়া যায়। দাম একটু বেশী হওয়ায় হিমশিম খাচ্ছি।
শহরের মধ্যবাজারে শপিং মল গুলোতে উচ্চবিত্তের ক্রেতাদের ভীড় থাকলে শহরের নুরানী মার্কেটে নিম্ন মধ্যবিত্তের ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্যনীয় বেশী । দাম অনেকাংশে কমে পাওয়া যায় বলে সেখানে সারাদিনই নিম্ন আয়ের মানুষের সমাগম বেশী থাকে।
নবীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী বলেন, শহরের বাজারের সপিংমল গুলোতে এখন ক্রেতারা সাচ্ছন্দে কেনাকাটা করতে পারছেন। ক্রেতারা এখন ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের পন্য নবীগঞ্জে বসেই পাচ্ছেন। নবীগঞ্জ বাজারের পরিবেশ ভালো ও সুষ্টু থাকায় ক্রেতাদের অধিকাংশই সিলেট-হবিগঞ্জ শহরে না গিয়ে এখন নবীগঞ্জেই তাদের পছন্দের সব কেনাকাটা করে স্বস্থিবোধ করছেন। তবে বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারনে ব্যাবসায়ীদের অনেকটা ব্যাঘাত ঘটচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর