,

ইসলামে আদর্শ কর্মীর সাতটি বৈশিষ্ট্য

সময় ডেস্ক : ইসলাম যেভাবে মালিককে শ্রমিকের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, তেমন কর্মীকেও অনুপম নীতিবান ও দায়িত্বশীল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। নিম্নে ইসলামের দৃষ্টিতে আদর্শ কর্মীর সাতটি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো।
১. নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া : মুমিন তাঁর কাজের ক্ষেত্রেও বিশুদ্ধ নিয়তের অধিকারী হবে। যেমন: একজন শ্রমিক হালাল উপার্জন, ভিক্ষাবৃত্তি থেকে আত্মরক্ষা, পরিবারের ভরণ-পোষণের নিয়ত করলে তিনি পরকালে প্রতিদানের আশা করতে পারেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমলের প্রতিদান নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১)
২. পরিপূর্ণ কাজ করা : মুমিন যখন কোনো কাজ করে, সে তা পরিপূর্ণ যত্ন ও মনোযোগের সঙ্গে করে। সে তা অবহেলা করে না এবং অসম্পূর্ণও রাখে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ পছন্দ করেন যে তোমাদের কেউ যখন কোনো কাজ করবে সে তা যথাযথভাবে করবে। (সহিহুল জামে, হাদিস : ১৮৮০)
৩. দায়িত্বকে আমানত মনে করা : মুমিন কর্মী তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্বকে আমানত মনে করে এবং তা সংরক্ষণের চেষ্টা করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আপনার মজুর হিসেবে সেই উত্তম যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ২৬)
৪. কাজের গোপনীয়তা রক্ষা করা : প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কিছু নিজস্ব নীতি ও কৌশল আছে, যার ওপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ভর করে। ইসলাম কর্মীদের এমন কৌশল ও নীতিমালা গোপন রাখার নির্দেশ দেয়। বিশেষত যখন এর সঙ্গে সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা জড়িত থাকে। একান্ত অপারগতা ও সামগ্রিক কল্যাণ ছাড়া তা প্রকাশ করবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোনো ব্যক্তি কোনো কথা বলার পর আশপাশে তাকালে তার ওই কথা (শ্রবণকারীর জন্য) আমানাত বলে গণ্য হবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৯৫৯)
৫. সহকর্মীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার : ইসলাম পারস্পরিক সাক্ষাতে হাসিমুখে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছে। আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫৬)
৬. সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করা : কর্মক্ষেত্রে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগত পছন্দ ও অপছন্দের ভিত্তিতে নৈকট্য ও দূরত্ব কখনো কখনো মানুষের জন্য বিপদের কারণ হয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘নিজের বন্ধুর সঙ্গে ভালোবাসার আধিক্য প্রদর্শন করবে না। হয়তো সে একদিন তোমার শত্রু হয়ে যাবে। তোমার শত্রুর সঙ্গেও শত্রুতার চরম সীমা প্রদর্শন করবে না। হয়তো সে একদিন তোমার বন্ধু হয়ে যাবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৯৯৭)
৭. অফিসের সম্পদ রক্ষা করা : কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের হাতে রাষ্ট্র, কম্পানি বা অফিসের সম্পদ অর্পণ করা হয়। শ্রমিকের দায়িত্ব এসব সম্পদ রক্ষা করা। কেননা এসব সম্পদের ব্যাপারে পরকালে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের সবাই দায়িত্বশীল। প্রত্যেকে তার অধীন বিষয়ের জন্য জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫১৮৮)


     এই বিভাগের আরো খবর