,

ওজন কমাতে ‘মিলিটারি ডায়েট’

সময় ডেস্ক : ওজন কমাতে কত কিছুই না আমরা করি। লো-কার্ব, ব্যালান্স, হাই প্রোটিন, কিটো, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংসহ কত ধরনের ডায়েটের কথাই তো শোনা যায়। কিন্তু ওজন কমাতে মিলিটারি ডায়েটের কথা শুনেছেন? মডেল বা তারকারা অনেকে এই মিলিটারি ডায়েট করে থাকেন। তবে মিলিটারি ডায়েটের সঙ্গে মিলিটারি বা সামরিক বাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই। নির্দিষ্ট নিয়মনীতি, সংকল্প ও শৃঙ্খলা মেনে চলার বিষয়গুলোয় জোর দেওয়া হয় বলে মূলত এই ডায়েটকে মিলিটারি ডায়েট নামে ডাকা হয়।
যেভাবে মিলিটারি ডায়েট : যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০-২০২৫ ডায়েটারি গাইডলাইন অনুযায়ী, ১৮-৬০ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের প্রতিদিন ২২০০-২৪০০ কিলোক্যালরি আর প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ১৬০০-১৮০০ কিলোক্যালরি গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু মিলিটারি ডায়েটে প্রতিদিনের ক্যালরির মাত্রা থাকে ১১০০-১৪০০ কিলোক্যালরি। স্ন্যাকস ছাড়াই প্রথম তিন দিনের জন্য সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের জন্য একটি বিশেষ সেট মেন্যু তৈরি করে দেওয়া হয়। কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে আর কোন কোন খাবার বাদ দিয়ে চলতে হবে, তারও নির্দেশনা দেওয়া থাকে। পরবর্তী চার দিনও প্রতিদিন ১৫০০ কিলো ক্যালরির বেশি খাওয়া যায় না। এই ডায়েটের খাবার অনেকটাই লো ক্যালরি বলে শারীরিক জটিলতা হতে পারে।
তাই জটিলতা এড়াতে এই ডায়েট শুরু করার আগে কয়েকটি বিষয় মনে রাখতে হবে : ডায়েট শুরু করার আগে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। একই সঙ্গে সেই পুষ্টিবিদের পরামর্শমতো তালিকা মেনে চলতে হবে। তিন দিনের বেশি একনাগাড়ে এই ডায়েটে থাকবেন না। সপ্তাহের প্রথম তিন দিন পার হওয়ার পর বিরতি নিন। চার দিন বিরতি নিয়ে আবার শুরু করুন। এই চার দিনের বিরতিতে প্রতিদিন ১৫০০ কিলোক্যালরি করে খাবার গ্রহণ করবেন। এরপর আবার তিন দিন লো ক্যালরিতে যাবেন। ডায়েটে থাকা অবস্থায় ক্লান্ত লাগলে বা মাথা ঘোরালে সঙ্গে সঙ্গে ডায়েট ছেড়ে দিন। কোনো রোগের চিকিৎসা চলতে থাকলে এই ডায়েট করবেন না।
মিলিটারি ডায়েট কতটা নিরাপদ : সপ্তাহে একবারে এতটা ওজন কমানো ঝুঁকিপূর্ণ এবং অস্থায়ী হতে পারে। এত দ্রুত ওজন কমানোর ফলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি, পেশির ক্ষয় এবং খাবারের সঙ্গে শরীরের একটি অস্বাস্থ্যকর সম্পর্ক তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যাঁরা অ্যাথলেটস তাঁরা যদি নির্দিষ্ট কোনো কারণে দ্রুত ওজন কমানোর জন্য এ ধরনের ডায়েট অনুসরণ করেন, তাহলে তাঁদের অপুষ্টিজনিত জটিলতা ও শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এই কম ক্যালরির খাবার তালিকা মেনে চলার সময়ে দেহ মাংসপেশির সঞ্চিত প্রোটিনকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে। মাংসপেশি ক্ষয় হওয়ার কারণে বিশ্রামরত অবস্থায় শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীরগতির হয়, যা পরে ওজন কমানোর জন্য হুমকিস্বরূপ। দ্রুত ওজন কমানোর ফলে পিত্তথলিতে পাথরসহ নানা রোগের ঝুঁকি তৈরি করে। স্বাস্থ্যের ওপর এই ডায়েটের প্রভাব নিয়ে বড় আকারের কোনো গবেষণা নেই, তাই এই ডায়েটের ফলে কী কী শারীরিক সমস্যা হতে পারে, তার অনেকটাই এখনো অজানা।
সবশেষে একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি, ডায়েট শেষ করার পর আপনি যদি আবার অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে চলে যান তাহলে ঝরে যাওয়া ওজন খুব দ্রুত ফেরত আসবে। এ জন্য ভালো ফল পেতে অতিরিক্ত চিনি, লবণ, তেল, মসলা আর কোমল পানীয় একেবারেই ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন।


     এই বিভাগের আরো খবর