,

বিবিয়ানায় কম্পনের কারণ জানতে আরো সময় লাগবে

স্টাফ রিপোর্টার : নবীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের নর্থ প্যাড এলাকার আশপাশের ভূমি গত শনিবার রাতে ও রোববার সকালে কেঁপে ওঠে। উপজেলার দীঘলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ৭৬টি গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক বসতবাড়িতে এ কম্পনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় পেট্রোবাংলার গঠন করে দেওয়া তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও তারা সময় বাড়িয়ে নিয়েছে। প্রতিবেদন দিতে আরও দুই দিন সময় লাগতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক, ইনাতগঞ্জ, কুর্শিসহ তিনটি ইউনিয়নে দেশের অন্যতম বৃহৎ গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানা অবস্থিত। এ গ্যাসক্ষেত্রের নর্থ প্যাড অবস্থিত দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক গ্রামে। নর্থ প্যাড এলাকায় বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের ২৬টি কূপ রয়েছে। সম্প্রতি আরও দুটি কূপের খননকাজ শুরু করে বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশ। এ কূপ খননকালে এ কম্পনের সৃষ্টি হয়।
নর্থ প্যাড এলাকার পশ্চিমে নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক, জামারগাঁও, রাধাপুর, রামেরগাঁও, মধুরা, সাদুল্লাহসহ ৪২টি গ্রাম আছে। গ্রামগুলোয় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। শনিবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। কিছুক্ষণ পরপর ভূমি কাঁপছিল। কাঁপুনিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মধ্যে। ছোটাছুটি করে আহত হন অনেকে। ওই সময় শতাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। এলাকাবাসী রাতেই গ্যাসক্ষেত্রের সামনে এসে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করেন। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন এলাকাবাসীকে শান্ত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
এ ঘটনায় গত রোববার সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন ও পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন) মো. সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে পেট্রোবাংলা। কমিটির তিন দিনের মধ্যে, অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল।
দীঘলবাক এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘরের কোনো না কোনো অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। দীঘলবাক উচ্চবিদ্যালয় ও গ্রামের মসজিদসহ সব কটি স্থাপনাতে এ ফাটলের চিহ্ন রয়েছে। এ নিয়ে কথা হয় গ্রামের ১০-১২ জন অধিবাসীর সঙ্গে। সবার অভিযোগ, শেভরন কূপের খননকাজ চালানো অবস্থায় এ কম্পনের সৃষ্টি হয়। তাঁদের ধারণা, প্রতিষ্ঠানটি ভুল পদ্ধতিকে খনন করায় তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান গনমাধ্যমকে জানান, তাঁরা দুই দিন তদন্তকাজ করেছেন। প্রথম দিন ফিল্ডের ভেতরে পর্যবেক্ষণ করেছেন। পরের দিন যাঁদের বসতঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে, সে স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিষয়গুলো খুবই টেকনিক্যাল। আরও সময় নিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। শেভরন ন্যাচারাল ভূমিকম্পের যে দাবি করেছে, তা যাচাই-বাছাই করতে আমরা ভূমিকম্পের রেকর্ড সংগ্রহ করব। এ জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহযোগিতা নিতে হবে।’ প্রতিবেদন দিতে আরও দুই দিন লাগতে পারে বলে এ কর্মকর্তা জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর