,

হবিগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ ও রস :: জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি গাছ থেকে রস সংগ্রহ

জুয়েল চৌধুরী : হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও খেজুরের রস। শীত মৌসুম এলেই এক সময়ে গ্রাম-বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে খেজুরের রস দিয়ে ফিরনি, পায়েস, রসের গুড় দিয়ে ভাঁপা পিঁঠা এবং গাড় রস তৈরি করে মুড়ি, চিড়া, খই ও চিতই পিঠাসহ হরেক রকম পিঠাপুলির মহাউৎসব চলত। কিন্তু আগের মতো গ্রাম্য রাস্তার দু’পাশে সারি সারি খেজুর গাছ আর নেই। গ্রামের রাস্তা গুলো সংস্কার ও নতুন করে খেজুর গাছ রোপনে মানুষের আগ্রহের অভাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও খেজুরের রস ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনও রাস্তার আশেপাশে কালের স্বামী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিছু খেজুর গাছ। আর রস আহরণে এখনো গ্রাম্য রীতিতেই ঝুঁকি নিয়েই কোমরে রশি বেঁধে শীতের বিকালে ছোট-বড় মাটির হাঁড়ি গাছে বেঁধে তা থেকে রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা আগে তারা এই কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু এখন আর কেউ নিপাহ ভাইরাসের ভয়ে আগের মতো খেতে দেখা যায় না। তবে ফুটিয়ে খাবার জন্য পরামর্শ দেন চিকিৎসক। এতে ঝুঁকি থাকে না।
আবার কেউ কেউ সকালে রস জ্বাল দিয়ে গুড়-মিঠাই তৈরি করতো। প্রতিবছর এই মৌসুমে অযত্নে-অবহেলায় পথে প্রান্তরেও পরে থাকা খেজুর গাছের রস ও গুড় বিক্রি করে এ সময়ে দুটো টাকা বাড়তি আয় করতো তারা।
হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে আগে অনেকেই শীত মৌসুমে খেজুরের রস বিক্রি করে জীবীকা নির্বাহ করতেন, কিন্তু এখন খেজুর গাছ এর সংখ্যা কমে যাওয়ায় এখন এ পেশায় মানুষ কাজ করেনা।
খোজ নিয়ে দেখা গেছে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। কারণ নতুন করে খেজুর গাছ রোপনে মানুষ আগ্রহী হচ্ছে না। খেজুর গাছ রোপনে সরকারী-বেসরকারী প্রচারণা থাকলে খেজুর গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারত, না হলে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর গাছের রস, হারিয়ে যাবে গ্রাম বাংলার আরো একটি ঐতিহ্য। বাংলার এসব ঐতিহ্য ধরে না রাখলে একসময় খেজুরের রসের কথা আগামী প্রজন্মকে শুধুই গল্প শুনাতে হবে।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা প্রশাসকের কালেক্টর ভবনের সাবেক তথ্য অফিসের সামনে একটি খেজুর গাছ থেকে রস নামাচ্ছেন এক গাছি।


     এই বিভাগের আরো খবর