,

শ্বশুরবাড়ি ইফতার চাওয়া লোকদেরও ইফতারি দেবে ‘ইউনাইটেড নবীগঞ্জ’!

জাবেদ তালুকদার : শ্বশুরবাড়ি থেকে ইফতার না চেয়ে ‘ইউনাইটেড নবীগঞ্জ’ এ ইফতার চাইতে উৎসাহ দিচ্ছে সামাজিক সংগঠন ‘ইউনাইটেড নবীগঞ্জ’। গতকাল বিকাল ৪টার দিকে সংগঠনটির সদস্য ইসলাম ইফতির ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডি থেকে এ সংক্রান্ত একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাস দেয়া হলে মুহুর্তের মধ্যেই পোস্টটি রীতীমত ভাইরাল হয়ে যায়। শুরু হয় নানা আলোচনা। নেটিজেনদের প্রশংসায় ভাসতে থাকে সংগঠনটির এই উদ্যোগ।
ইফতারি ও আম-কাঁঠালি সমাজে প্রচলিত অপসংস্কৃতির কয়েকটির মধ্যে অন্যতম। নবীগঞ্জসহ সিলেটের প্রায় প্রত্যেক এলাকাতেই মহামারির মত দেখা দিয়েছে এই দুটি অপসংস্কৃতি। প্রচলিত এ দু’টি অপসংস্কৃতি প্রভাবশালী পরিবারের জন্য খুব একটা চিন্তার বিষয় না হলেও গরীব, অসহায় পরিবারের কর্তাদের জন্য পবিত্র মাহে রমজান এবং জ্যৈষ্ঠ মাস এক অসহনীয় সময়। সিয়াম সাধনার এ মাসে যেখানে ইবাদাতে মশগুল থাকার কথা সেখানে অসহায় বাবা ও পরিবারের কর্তারা চিন্তায় থাকেন কীভাবে ইফতারি দেবে মেয়ের বাড়িতে? না হয় সম্মান যাবে, মেয়ের শ্বশুর বাড়ির মানুষ কি বলবে?
এমতাবস্থায় গরীব, অসহায় পরিবারের কর্তাদের দুঃখ লাঘবে নতুন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সামাজিক সংগঠন ‘ইউনাইটেড নবীগঞ্জ’। শ্বশুরবাড়ি থেকে ইফতার না চেয়ে ‘ইউনাইটেড নবীগঞ্জ’ এ ইফতার চাইতে উৎসাহ দিচ্ছে সামাজিক সংগঠনটি।
গতকাল বিকালে করা ইসলাম ইফতির পোস্টটি ছিল- ‘শ্বশুরবাড়ি থেকে ইফতার ভিক্ষা না করে ইউনাইটেড নবীগঞ্জ-এ যোগাযোগ করুন। আমাদের ২৫০০ টাকার প্যাকেট ইফতারে ১০০ পরিবারকে দেয়ার পরিকল্পনা আছে, প্রয়োজনে এরকম আরও ৮/১০টা পরিবার বাড়িয়ে নিবো। ভিক্ষাই তো চাইবেন ছেলের শ্বশুরবাড়ি থেকে, সেটা মেয়ের পরিবারের হয়ে আমরাই আদায় করে নিবো, ইনশাআল্লাহ।’
ইসলাম ইফতির করা ওই স্ট্যাটাসে, মোহাম্মদ জাকির নামে এক ফেইসবুক ব্যবহারকারী বলেন, ‘ঠিক আছে ভাই এরপরও যদি লজ্জা হয়’। রবিন আহমেদ সাজু নামে একজন লিখেন, ইউনাইটেড নবীগঞ্জের এই উদ্যোগটা সমপোযী ছিলো। ধন্যবাদ ইউনাইটেড নবীগঞ্জকে। অর্ক নেহার নামে একজন লিখেন, একেবারে যুৎসই হয়েছে ভাই। ফানি হলেও এটাই দরকার এদের জন্য।
জানা যায়, আসন্ন রমজানে নবীগঞ্জ উপজেলার আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মধ্যে ১০০ প্যাকেট ইফতার সামগ্রী বিতরণ করবে নবীগঞ্জের জনপ্রিয় সামাজিক সংগঠন ‘ইউনাইটেড নবীগঞ্জ’। প্রতি প্যাকেট ইফতার সামগ্রী হিসেবে থাকবে ৫ কেজি চাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি পেঁয়াজ, ৫০০ গ্রাম রসুন, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি ছোলা বুট, ১ কেজি লবন, ৫০০ গ্রাম গুঁড়া দুধ প্যাকেট, ১ কেজি খেজুর, ২০০ গ্রাম মরিচ গুঁড়া, ২০০ গ্রাম হলুদ গুঁড়া এবং ২০০ গ্রাম ধনিয়া গুঁড়া। এক পরিবারের জন্য সর্বমোট ১২টি আইটেম থাকবে। যার বাজার দর আনুমানিক ২৫০০ টাকা।

উল্লেখ্য, করোনাকালীন সময়ে উপজেলার বিভিন্নস্থানে ত্রানবিতরণ, অক্সিজেন সরবরাহ, লাশ দাফন, মেডিসিন ও এম্বুলেন্স সরবরাহ করেছে ইউনাইটেড নবীগঞ্জ। বিগত বন্যাতেও উপজেলায় আনুমানিক ৫ হাজার পরিবারের মধ্যে মাসব্যাপী ত্রানসামগ্রী বিতরণ করেছে সংগঠনটি।


     এই বিভাগের আরো খবর