,

নবীগঞ্জে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল অপারেশন করে শিশু’র লিঙ্গ কর্তন

স্টাফ রিপোর্টার : নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজারে সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে ভুল অপারেশন করে শিশুকে খৎনা করতে গিয়ে লিঙ্গ কর্তন করলে প্রচুর রক্ত করণ হয়। পরে রোগী কান্না কাটি করলে তাকে ও তার আত্বীয় স্বজনকে চিকিৎসক ও মালিক পক্ষ মারপিট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে উত্তেজিত জনতা প্রতিষ্ঠানটি ঘেরাও করে রাখে। লাইভে সংবাদ প্রচার করতে গেলে মালিক সুহুল আমিন সাংবাদিকদের হাত পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ভাবে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে কাউকে খোঁজে পায়নি। এ বিষয়ে ভুল অপারেশনের শিকার শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলার আউশকান্দি বাজার কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। উক্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১৫ দিন পূর্বে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনুমোদন বিহীন থাকায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। এবং সরকারি বিধি মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যেন পরিচালিত হয়।
সূত্রে জানাযায়, গতকাল বিকাল ৪টায় নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের আব্দুশ শহীদের পুত্র ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র তামিম আহমেদ (১২)কে খৎনা করার জন্য নিয়ে আসেন। তখন কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সুহুল আমিন ও ডাক্তার জহিরুল ইসলাম চৌধুরী জয় কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালা খুলে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন। হঠাৎ রোগীর চিৎকার শোনে মা বাবা আত্মীয় স্বজন ভিতরের প্রবেশ করে দেখেন রোগী চিৎকার করছে তখন ডাক্তার ও মালিক রোগীকে চর থাব্বর মারছেন। ওই সময় পিতা ও মাতা প্রতিবাদ করলে মালিক সুহুল আমিন ও তার লোকজন রোগীর আত্মীয় স্বজনকে মারপিট করে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বাহির করে দেন। তখন এনিয়ে চরম হট্রগোল শুরু হয়, খবর পেয়ে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ আহমদ আজাদ ও সাংবাদিক বুলবুল আহমদ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানতে চান। ওই সময়ে লাইভ করতে চাইলে সুহুল আমিন নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ আহমদ আজাদ কে হাতা পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে উপস্থিত জনতা রোগীকে উদ্ধার করে প্রথমে নবীগঞ্জ হাসপাতালে পরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। রাতে শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের ডাক্তার ও মালিকপক্ষসহ ৫ জনকে আসামি করে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বলেন, আমার ভাতিজাকে খৎনার নামে ভুল অপারেশন করে লিঙ্গ কেটে ফেলে, প্রচুর রক্ত করণ হয়েছে, সে কান্না কাটি করলে তামিমকে ডাক্তার ও মালিক মারপিট করেছেন। তাকে গুরুত্বর অবস্থায় সিলেটে একটি বেসরকারি হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার বলেন, তাদেরকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতি না আনা পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা হয়। একপশ্নের জবাবে তিনি বলেন কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কেন খুলা হল বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ওই প্রতিষ্ঠানকে আমরা ১৫ দিন আগে জরিমানা ও বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা টিএইচও ডাঃ আব্দুস সামাদ বলেন, অনুমোদন বিহীন কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারর কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আজকে কেন কে বা কারা খুলছে আমরা বিষয়টি জানিনা, খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাসুক আলী বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনাটির খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়েছি।


     এই বিভাগের আরো খবর