,

৭৫ লাখ টাকার ব্রিফকেস লুট নিয়ে তোলপাড়! ৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের

মতিউর রহমান মুন্না ॥ রুপ কথার গল্পের মতো কাহিনী, ৭৫ লাখ টাকার কুড়িয়ে পাওয়া ব্রিফকেস নিয়ে। মাটির নীচে পুঁতে রেখেও রক্ষা করতে পারল না স্বপ্নের ব্রিফকেস। পদ্মলোচনের গোপন ধন লুট করেছে গ্রামের ৪ যুবক। তারা প্রভাবশালী এক নেতাকে ভুয়াঁ মালিক সাজিয়ে জোর পূর্বক মাটির নীচে লুখিয়ে রাখা টাকা ভর্তি ব্রিফকেস নিয়ে যায়। সে এখন ব্রিফকেস হারিয়ে পাগল প্রায় হয়ে পথে-পথে ঘুরছে। যুবকের নাম হচ্ছে  দিন মজুর শাহিন। এ ঘটনা নিয়ে ৭ দিন যাবৎ চলছে সর্বত্র তোলপাড়। গতকাল এব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় এজাহার দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্রিফকেস লুটের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। সরজমিনে তথ্য নিয়ে জানাযায়, প্রায় ২০দিন পূর্বে হবিগঞ্জ পৌরসভার উমেদনগর এলাকার দিন মজুর শাহীনের সাথে মোবাইলে আলাপ করে জানা গেছে- কয়েকদিন আগে সে বুল্লা এলাকার একটি চা স্টলের কেবিনে নাস্তা করার জন্য প্রবেশ করলে দেখে চেয়ারে একটি ব্রিফকেস পড়ে রয়েছে। সে নাস্তা শেষ করে ওই ব্রিফকেসটি হাতে করে নিয়ে আসে। টাকার ব্যাগটি সে হবিগঞ্জ শহরে বোনের বাসায় নিয়ে যায়। পরে তার বাড়িতে নিয়ে খুলে দেখে শুধু টাকা ও গুনে দেখে এতে ৭৫ লাখ টাকা আছে। এরপর ১লাখ টাকা নিয়ে সে খরচ করে ফেলে। তার বোনকে কিছু টাকার কথা বললে সেও দাবী করে। এতে শাহীন তার বোনকে টাকা দিবে বলে আশ্বাসও দেয়। কিন্তু কি করবে কোন দিক নির্দেশনা পাচ্ছিল না। ব্রিফকেস ভর্তি ৭৪ লাখ টাকা নিয়ে রাতে সিএনজি যোগে, অবশেষে সে নবীগঞ্জের বাউসা ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামে তার শ্বশুর আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার বাড়িতে আসে। তাদেরকে টাকার কথা বলে বসত ঘরের চৌকির নীচে গর্ত করে, ওই টাকা গুলা ব্রিফকেস সহকারে মাটির নীচে পূতে রাখে। সিএনজি যোগে আসার পথে মোবাইল ফোনে তার আত্মীয় স্বজনের সাথে টাকা গুলির বিষয়ে কথা বলে। মোবাইল ফোনের আলাপ শুনে এই সিএনজি চালক বদর ঘটনাটি আচঁ করে তার মনের মধ্যে লোভ চলে আসে। আর সিএনজি চালক বদরের বাড়ি ওই গ্রামে ও গ্রাম সর্ম্পকে শাহিনের স্বমন্ধি এবং রব্বানের বন্ধু বটে। ব্রিফকেসে টাকা রয়েছে তা বুঝতে পেরে সিএনজি চালক বদর, শাহীনের কাছে সিএনজি ক্রয় করার জন্য ৫ লাখ টাকা দাবী করে। এসময় শাহীন পরে টাকা দিবে বলে বদরকে আশ্বাস দেয়। বিষয়টি বদর মিয়া বিশ্বাস না করে এ নিয়ে শাহীনের মামা শ্বশুর গহরপুর গ্রামের আলাল মিয়া, জয়নাল মিয়া ও তিমির পুর গ্রামের মালিক মিয়ার সাথে আলাপ করে। বদর ও আলাল মিয়া আরো কয়েকজনকে নিয়ে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে তারা প্রভাবশালী সাবেক ছাত্রলীগ-নেতাকে ভুয়াঁ মালিক সাজিয়ে এই নেতা তার কয়েকজন ছাত্রলীগের ঘনিষ্ঠভাজন নেতা কর্মীদের নিয়ে আব্দুল রেজ্জাকের বাড়ীতে গভীর রাতে হানা দিয়ে জোর পূর্বক মাটির নীচ থেকে লুখিয়ে ব্রিফকিসটি তুলে নিয়ে যায়। শাহিন মাটির নীচে পুঁতে রেখেও রক্ষা করতে পারল না স্বপ্নের টাকা ভর্তি ব্রিফকেসটি। পদ্মলোচনের গোপন ধন লুট করেছে গ্রামের ৪ যুবকসহ কতিথ প্রভাবশালী গংরা। পরে টাকাগুলো এই সিন্ডিকেটের লোকরা তাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এব্যাপারে পাশ্ববর্তী মাইজগাঁও গ্রামের কতুব উদ্দিন বলেন পরদিন আমি ঘটনা শোনে সিএনজি চালক বদরের সাথে কথা বলেছি। সে আমাকে বলে শাহীনের স্বমন্ধি ও রব্বানকে নিয়ে হোটেল সোনালীতে যাই ও হোটেলে থাকা সিএনজি চালক বদর, মালিক, আলাল গংরা হাজির হয়ে বলে রাতে যে ব্রিফকেস রব্বানের বাড়ি থেকে এনেছি সেটার মধ্যে কোন টাকা ছিল না। গহরপুর গ্রামের সুইল মিয়া, নুর মিয়া ও মুরব্বি জমসেদ মিয়া বলেন, সন্ধ্যার সময় কথিত প্রভাবশালীরা ৭/৮ জন লোক নিয়ে রেজ্জাক মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে এবং তন্ন তন্ন করে খুঁজে চৌকির নীচ থেকে মাটি কুড়ে  চকলেট রংয়ের ব্রিফকেস তুলে নিয়ে যায়। আমরা এসময় বাধাঁ দিলে তারা বলে, আমাদের সাথে পুলিশ আছে বাড়াবাড়ি করবে না, মেরে ফেলবো। তাদের ভয়ে আমরা প্রতিবাদ করেও রক্ষা পাইনাই। এ পযার্য়ে হুমকী দামকী দিয়ে কারযোগে ব্রিফকেস নিয়ে চলে যায়। এদের মধ্যে আলাল, বদর, জয়নাল, মালিককে চিনতে পারি বাকীদেরকে চিনতে পাড়ি নাই। এদিকে শাহীনের শ্বশুর আব্দুর রেজ্জাক বাদী হয়ে গত সোমবার সকালে নবীগঞ্জ থানায় এ ব্যাপারে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। নবীগঞ্জ থানার এস.আই আব্দুর রহিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি মামলা তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে উল্লেখিত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্রিফকেস লুটের কাহিনীর প্রাথমিক সত্যাতা পেয়েছি, তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত প্রকাশ করা যাবে না। এ ঘটনা নিয়ে নবীগঞ্জ শহরের সবর্ত্র আলোচনা ঝর বইছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.