,

শেষ মুহূতের্র গোলে সর্বনাশ

সময় ডেস্ক ॥ পরাজয়ের এ কষ্ট কোথায় রাখবেন রায়হান-নাসিররা। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু কাপের ফাইনালে হারের পর হতাশ-বিমর্ষ বাংলাদেশ-শিবির। প্রথমার্ধে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে ও দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ৯০ মিনিটেও স্কোরলাইন ২-২। কিন্তু ৯১ মিনিটেই বাংলাদেশের স্বপ্নের সলিল সমাধি! দারুণ এক হেডে জয়সূচক গোল করেই ছুটলেন মালয়েশিয়ার ফাইজাত। বিষাদের ছায়া নেমে এল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে গোটা বাংলাদেশে। দর্শকদের যে গর্জনে কান পাতা দায় ছিল, সেটাই ‘এ কী হলো’র বিমূঢ়তায় স্তব্ধ! প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ফাইনালে উঠেও মামুনুলদের ছুঁয়ে দেখা হলো না আরাধ্য ট্রফিটি। সোনার যে ট্রফিটা হতে পারত বাংলাদেশের ফুটবলের সোনালি দিন ফিরে আসার দারুণ এক উপলক্ষ। ফাইনালটা ৩-২ গোলে জিতল মালয়েশিয়া। প্রথমার্ধে সেমিফাইনালের সেই দুরন্ত বাংলাদেশকে ঠিক পাওয়া গেল না। স্নায়ুচাপ বেশ জেঁকে বসল মামুনুলের দলের ওপর। জড়তা কাটতেই সময় লেগে গেল অনেক। অবশ্য এলোপাতাড়ি ফুটবল খেলেছে মালয়েশিয়াও। অগোছালো ফুটবলের মধ্যেই ৩১ মিনিটে অসাধারণ এক ফ্রিকিকে মালয়েশিয়াকে প্রথম এগিয়ে দেন নাজিরুল নাইম। ৪০ মিনিটে প্রতি আক্রমণে মালয়েশিয়ার ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কুমারন। আলগা রক্ষণ, ছন্নছাড়া মধ্যভাগ আর ভোঁতা আক্রমণ প্রথমার্ধে বাংলাদেশ ছিল ভীষণ ছন্নছাড়া! তবে দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশকে দেখা গেল অন্য চেহারায। দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরল লাল-সবুজের দল। মাত্র পাঁচ মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়াল মামুনুলরা। ৪৯ মিনিটে বাংলাদেশের প্রথম গোল করেন জাহিদ হোসেন এমিলি আর ৫৪ মিনিটে ইয়াসিনের দুর্দান্ত হেড সমতায় ফেরায় বাংলাদেশকে। প্রথমটি রায়হানের লম্বা থ্রো থেকে বক্সে ফেলা বলে। সেমিফাইনালের নায়ক নাসির উদ্দিন হেড করলে তা ফিরিয়ে দেন মালয়েশিয়ান গোলরক্ষক। ফিরতি শটে জালে বল জড়ান এমিলি। ফাইনালে এসে টুর্নামেন্টে প্রথম গোলের দেখা পেলেন বাংলাদেশ স্ট্রাইকার। দ্বিতীয় গোলটি আসে মামুনুলের কর্নার থেকে। বেশ কয়েক ফুট ওপরে লাফিয়ে জোরালো হেড করেন ইয়াসিন। ফাইনালের মতো তুমুল স্নায়ুুচাপের ম্যাচে প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর এভাবে ঘুরে দাড়ানো অবিশ্বাস্য তো বটেই! দর্শকদের আক্ষেপটা এখানেই, দারুণভাবে ঘুরে দাড়ানোর পরও কেন ম্যাচটা হাত থেকে ফসকে গেল ৭ মিনিটে চোটের কারণে মাঠ থেকে উঠে যান ফরোয়ার্ড জাহিদ। এ ছাড়া চোটের কারণে মাঠে অনুপস্থিত ছিলেন দলকে সেমিফাইনালে তোলা হেমন্ত বিশ্বাসও। দু’জনের অনুপস্থিতি ভালোভাবেই অনুভব করেছে বাংলাদেশ। তবে রায়হানের দুরন্ত সব লম্বা থ্রো, মামুনুলের কর্নার, জামাল ভুঁইয়ার স্কিল যেমন মুগ্ধতা ছড়িয়েছে তেমনি কিছু সুযোগ হাতছাড়ার আক্ষেপও অনেক দিন তাড়া করবে বাংলাদেশের। রানার্সআপ হলেও এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রাপ্তি নেহাত কম নয়। বহুদিন পর গ্যালারিতে দেখা গেল দর্শকের জোয়ার। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে মানুষ কিছুটা স্বস্তি খুঁজে পেয়েছিল ফুটবলে। টুর্নামেন্টটা জিততে পারলে প্রাপ্তির ষোলকলা পূর্ণ হতো; মানুষ এ বৈরী সময়ে পেত আনন্দের ছোঁয়া। আফসোস, তুলির শেষ আঁচড়টা সময় মতো দিতে পারলেন না মামুনুল-এমিলিরা!


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
×

Like us on Facebook

Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.