সময় ডেস্ক : মেসি আবারও দুরন্ত। কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ’! গত কয়েক বছর বিষয়টা এমন দাঁিড়য়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর যখন ‘সুসময় লিওনেল মেসির তখন দুঃসময় আবার বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের যখন সুসময় রিয়াল ফরোয়ার্ডের ঠিক বিপরীত! এ বছরের শুরুতেই মেসি ফিরেছেন পুরোনো রূপে। অন্যদিকে পরিসংখ্যান বলছে, বড্ড বাজে যাচ্ছে সিআর সেভেনের সময়টা! তাহলে মেসি উড়ছেন, রোনালদো পড়ছেন পড়ছেনই তো! নইলে ইরিনা শায়াকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সিআর সেভেনের কেন হঠাৎ ছন্দপতন তবে কি ব্যক্তিগত সমস্যার প্রভাব পড়েছে পর্তুগিজ উইঙ্গারের পারফরম্যান্সে মেসি এ বছর সব ধরনের প্রতিযোগিতায় পেয়েছেন ১৪ গোল, সেখানে রোনালদোর মোটে চারটি। টানা তিন ম্যাচে গোলহীন রিয়াল তারকা (সর্বশেষ গোল পেয়েছিলেন ১৮ই জানুয়ারি,গেটাফের বিপক্ষে )। রোনালদোর গোলহীন এ সময়ে তরতরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন মেসি। জানয়ারির প্রথম সপ্তাহে লিগে রোনালদোর যখন ১৬ ম্যাচে ২৬ গোল, মেসির তখন ২০ ম্যাচে ১৫ গোল। কিন্তু মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে দৃশ্যপটে কত বদল! ২০ ম্যাচে রোনালদোর গোলসংখ্যা ২৮ আর ২৩ ম্যাচে মেসির ২৬। লিগের গোলসংখ্যায় পিছিয়ে থাকলেও এ মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এরই মধ্যে রোনালদোকে ছাড়িয়ে গেছেন মেসি। ৩৩ ম্যাচে বার্সা ফরোয়ার্ডের গোল ৩৭, অন্যদিকে ৩৩ ম্যাচে রোনালদোর গোল ৩৬টি। সর্বশেষ লেভান্তের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে আরও কিছু রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন মেসি। ছুঁয়েছেন স্প্যানিশ ফুটবলে তেলমো জারার সর্বোচ্চ ৩১টি হ্যাটট্রিক ও লিগে রোনালদোর ২৩টি সর্বোচ্চ হ্যাটট্রিকের রেকর্ড। তবে একটি রেকর্ড ভাগাভাগি নয় করে নিয়েছেন একান্ত নিজের! লেভান্তের বিপক্ষে নেইমারের গোলটি বানিয়ে দিয়েছিলেন মেসি। লিগে বার্সা ফরোয়ার্ডের গোলসহায়তা বা অ্যাসিস্ট সংখ্যা দাড়িয়েছে ১০৬ টি। এটিই লিগে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট। ১০৫ অ্যাসিস্ট নিয়ে এত দিন এ তালিকায় শীর্ষে ছিলেন সাবেক বার্সা-রিয়াল উইঙ্গার লুইস ফিগো। মেসির সাফল্য মানেই বার্সার সাফল্য! মৌসুমের প্রথমার্ধ বলার মতো না হলেও লিগের দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাড়িয়েছে বার্সা। টানা ১১ ম্যাচ জিতে লুইস এনরিকে যেন পেপ গার্দিওলার অধীনে বার্সার সেই ‘সোনালি যুগে’র ইঙ্গিত দিচ্ছে। রোনালদোর সাম্প্রতিক ফর্ম, গত মাসে কর্দোবার বিপক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ ও লাল কার্ডের পেছনে অনেকেই যোগ খুঁজে পাচ্ছেন ইরিনার সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘটনা! সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রোনালদোর সঙ্গে ইরিনার সম্পর্কের শীতলতা শুরু মূলত বড়দিনের পর (২৫ ডিসেম্বর) থেকেই। আর সেটি টুটে যায় জানুয়ারির শুরুতেই। এরপর থেকেই রোনালদোর ফর্মে ছন্দপতন। আসলে মনটা যদি বিক্ষিপ্ত ও অশান্ত থাকে, খেলায় পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া কঠিনই। ইরিনার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর গত দেড় মাসে রোনালদো খেলেছেন আটটি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ, করেছেন চার গোল। এর মধ্যে আবার পেনাল্টি থেকে একটি। এ ম্যাচগুলো যারা দেখেছেন, তাঁরা বলছেন, রোনালদো ঠিক রোনালদোর মতো নেই। সেই গতি, ক্ষিপ্রতা, গোলের নেশা বড্ড অনুপস্থিত রিয়াল তারকার খেলায় মেসি উড়ছেন, রোনালদো পুড়ছেন!
Leave a Reply