সময় ডেস্ক ॥ মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের জঙ্গলে উদ্ধার হওয়া আনুজে নামক বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে থাই সরকারকে অনুরোধ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস তাকে ফিরিয়ে আনতে থাই সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেছেন। পরাষ্ট্রসচিব শহিদুল হক বিবিসিকে বলেছেন, উদ্ধারকৃত সেই ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের রাষ্ট্রদূত কথা বলেছেন, তিনি নিজেকে বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। উদ্ধারের পরপরই রাষ্ট্রদূত যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিকে থাই সরকার নিকটতম হাসপাতালে নিয়ে গেছেন চিকিৎসার জন্য এবং তিনি ভালো আছেন। আমাদের রাষ্ট্রদূত তার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আমরা দ্রুত তাকে সনাক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য থাই গভমেন্টকে অনুরোধ করেছি। একই সাথে এই যে ঘটনাগুলো ঘটছে এসব ব্যাপারে বেশ কিছুদিন ধরে আমরা আমাদের যে আইন রক্ষাকারী বাহিনী আছে তারা সজাগ ছিলেন। কিন্তু এর মধ্যেও মানবপাচারকারীরা বিভিন্ন ভাবে মানুষ জনকে এখান থেকে পাচার করছেন। বিশেষ ভাবে মায়ানমার থেকেও বেশি আসছেন, রোহিঙ্গা কমিউনিটি আছেন। থাইল্যান্ডের পুলিশ গত শুক্রবার জঙ্গলে ৩২টি কবরের সন্ধান পায়। ধারণা করা হচ্ছে- সেগুলো বাংলাদেশ বা মিয়ানমারের নাগকিদের, যারা অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যেতে চেষ্টা করেছিল। এদিন গণকবরটির কাছে মুমূর্ষ অবস্থায় এক বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, যে ২৬টি মৃতদেহর উদ্ধার করা হয়ে তার মধ্যে বাংলাদেশি আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেন জানান শহিদুল হক। তিনি বলেন, সেখানে আমাদের রিমিগেশন ডিপার্টমেন্টের লোক আছেন আমাদের বাংলাদেশের দূতাবাস আছেন তারা সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন। সনাক্ত করার জন্য। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার ব্যবস্থা নিবে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। কিন্তু এর মধ্যেও দুই/একটা ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে জনগণের সহযোগিতা অসম্ভব ভাবে প্রয়োজন। এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে যত অভিবাসন বিষয়ক দুর্যোগের খবর পাওয়া গেছে, সবজায়গাতেই ঘটনার শিকার হিসেবে বাংলাদেশিদের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর কারন হিসেবে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন বিষয়ক কর্মসূচীর প্রধান হাসান ইমাম বিবিসিকে বলছেন, বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকদের মূল গন্তব্য যেসব দেশ, সেখানে নিয়মিত অভিভাসন প্রক্রিয়া যখনই ব্যহত হয়, তখনই অবৈধ পথে বিদেশ যাবার প্রবণতা বাড়ে। এছাড়া দেশে কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণও বৈধ বা অবৈধভাবে বিদেশে যাবার প্রবণতার একটি অন্যতম কারণ। তবে, ঠিক কি পরিমাণ লোক প্রতিবছর অবৈধভাবে বিদেশে যায়, সে বিষয়ে সঠিক কোন পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। অবৈধভাবে বিদেশে যাবার ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হওয়া এবং সেখানে গিয়ে অমানবিক জীবনযাপনে বাধ্য হবার কথা জেনেও, মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ পথে বিদেশে যায়, তার আরেকটি কারন হিসেবে অজ্ঞতাকে দায়ী করেন হাসান ইমাম।
Leave a Reply