,

নবীগঞ্জের ইউএনও তাজিনা সারোয়ারের সহায়তায় ১২ শতক জায়গা বরাদ্দ পেলেন ইউপি সদস্য রহিমা বেগম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে ব্রীজের নিচে বসবাস করে আসছেন ইউপি সদস্য রহিমা। এনিয়ে দৈনিক হবিগঞ্জ সময় সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে খাস জমির ১২ শতক বরাদ্দ পেয়েছেন রহিমা বেগম। তবে অর্থের অভাবে এখনও ঘরবাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ নিতে পারছেননা এই সহায়-সম্বলহীন নারী ইউপি সদস্য। উল্লেখ্য, নাগরিক সুবিধার দেখভাল করলেও নিজেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের নির্বাচিত সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রহিমা বেগমের। শীত কি বর্ষায় কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই এই মহিলা মেম্বার ও তার পরিবারের লোকজনের। ফলে দীর্ঘ এক যুগ ধরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্যস্ততম রাস্তা সৈয়দগঞ্জ বাজার সংলগ্ন মনু খালের ব্রিজের নিচে বসবাস করে আসছেন তিনি। সারা দিন-রাত তাদের উপর দিয়ে চলাচল করে কয়েক হাজার যানবাহন। আর বর্ষার সময় খালে পানি বেড়ে যায়। এতে তাদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। গেল নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েও ভূমিহীনের তালিকা থেকে নাম কাটাতে পারেননি তিনি। এনিয়ে গেল ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে হবিগঞ্জের বিভিন্ন কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় ফলাও করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি নজড়ে আসে স্থানীয় প্রশাসনের। ওই দিনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার নারী ইউপি সদস্য রহিমা বেগমের সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন এবং তিনি খোজঁ খবর নিয়ে ভূমিহীন হিসেবে রহিমা বেগমকে পূর্নবাসন করার উদ্যোগ নেন। এর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জীতেন্দ্র কুমার নাথের সাথে আলোচনা করে ওই এলাকায়ই খাস জমির ১২ শতক বরাদ্দ দেন রহিমা বেগমকে। তবে খাস জমি পেলেও অর্থের অভাবে এখনও ঘর বাড়ি নির্মান করতে পারেননি ওই নারী ইউপি সদস্য। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাজিনা সারোয়ার জানান, রহিমা বেগমকে একটি ঘর নির্মানের পরিকল্পনা রয়েছে প্রশাসনের। তিনি বলেন শীঘ্রই তার হাতে জায়গার দলিল হস্তান্তর করে ঘর নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। স্থানীয়রা জানান, অভাব কখনই থামাতে পারেনি রহিমা বেগমকে। সবার আগে ছুটে যান এলাকাবাসীর সুখে-দু:খে। এর প্রতিদানও পেয়েছেন নির্বাচনে। মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যয়ে ৩ বার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন রহিমা। গেল ইউপি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর তিনি কোমর বেঁধে নির্বাচন প্রচারণায় মাঠে নেমে পড়েন। গেল বছরের গত ২৮ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৩ প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অপর দুই প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৮শ’ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন রহিমা বেগম। সহায়-সম্বলহীন এ ইউপি সদস্যের বয়স প্রায় ৫০ বছর। তিনি আউশকান্দি ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের মকদ্দুছ মিয়ার স্ত্রী। তাদের ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। অসুস্থ স্বামী ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে দিশেহারা হয়ে পড়েন রহিমা বেগম। দীর্ঘদিন ঘটক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। আর এ সুবাধেই এলাকার সকল মানুষের সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ জন্যই বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন তিনি। এবার গনমাধ্যমের কল্যানে ইউএনও তাজিনা সারোয়ার এর আশু হস্তক্ষেপে তিনি মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন। সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের সংবাদ দেখে ইউএনও মহোদয় আমার পরিবারকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। এর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এবং ঘর বাড়ী নির্মানের জন্য বৃত্তবান দেনদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর