,

মাধবপুরে কলেজ ছাত্রী গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ॥ স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামে কলেজ ছাত্রী গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে তার স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন আত্মগোপন করেছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০ টায় মাধবপুর থানার এসআই আক্তারুজ্জামান লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। গৃহবধূর চাচা মৃত আব্দুল হামিদের পুত্র বাবুল মিয়া জানান, দুই বছর আগে একই উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা তার বড় ভাই ইলিয়াছ মিয়ার কন্যা সৈয়দ সঈদ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্রী রিপা আক্তার (২০) কে বিয়ে দেয়া হয় রতনপুর গ্রামের ছাবু মিয়ার পুত্র স্কয়ার ঔষধ কোম্পানীর মাধবপুর শাখার এরিয়া ম্যানাজার জাহের উদ্দিনের নিকট। বিয়ের সময় রিপাকে যথাসাধ্য উপহার দেয়া হয়েছিল। দাম্পত্য জীবনে রিপার গর্ভে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। সম্প্রতি জাহের গাড়ি কেনার জন্য রিপার নিকট টাকা দাবি করে। বিষয়টি রিপা তার
স্বজনদের জানায়। কিন্তু তার দরিদ্য পিতার পক্ষ থেকে টাকা দেয়া সম্ভব হয়নি। ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে জাহের এবং রিপাকে বিভিন্ন সময় টাকা এনে দিতে নির্যাতন করতে জাহের। নির্যাতনের বিষয়টি রিপা প্রায়ই তার পিতা মাতাকে জানায়। রিপার অভিভাবকরা জাহেরের পরিবারের নিকট বিচার প্রার্থী হয়ে প্রতিকার পায়নি। গত মঙ্গলবার রাতে রিপা ফোনে তার মাকে জানায়, যৌতুকের জন্য জাহের ও তার পরিবারের লোকজন তাকে মারধোর করছে। এরপর থেকে রিপার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। রাত ১০ টার দিকে জাহের রিপার পরিবারকে জানায়, রিপাকে মাধবপুর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার অবস্থা ভাল নয়। এদিকে জাহের তরিগড়ি করে রিপার মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রিপার পিতা-মাতা হাসপাতালে গিয়ে রিপাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে আহাজারী শুরু করে বলেন, তাদের মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে। অবস্থা বেগতিক দেখে জাহের লাশ নিয়ে তার বাড়ি চলে যায় এবং সেখানে লাশ রেখে পালিয়ে যায়। রিপার মা সরূপা বেগম জানান, তারা আমার কন্যাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রিপা পড়ালেখায় ভাল ছিল। এসএসসিতে গোল্ডেন ফাইভ পেয়েছিল। তার ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হবে। গতকাল বুধবার সকালে এসআই আক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। তিনি জানান, লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়। এদিকে হাসপাতাল মর্গে চিকিৎসক দেবাশীস জানান, লাশের মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়। সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে মাধবপুর থানার ওসি মোক্তাদির হোসেন জানান, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর