সময় ডেস্ক ॥ দৃষ্টান্তমূলক সাজা না হওয়ায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ এবং তা ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। অপরপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মামুন। আদালত বলেন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাজা দেওয়ার হার কম। ধর্ষণ ও নির্যাতন করে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হলে নির্যাতনের শিকার নারী এবং তাদের পরিবারে বিরূপ প্রভাব পড়ে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে নিজ ঘরে ধর্ষণচেষ্টায় বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় রুলের শুনানিতে আদালত এ কথা বলেন। পর্নোগ্রাফি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মোবাইল কোর্টের সাজা দেওয়ার এখতিয়ার নিয়ে এ সময় প্রশ্ন তোলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক। এর আগে গত বছরের ৫ অক্টোবর ঘটনাটি আদালতের নজরে আনার পর ফুটেজ সরাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সিডি বা পেনড্রাইভে কপি রেখে ভিডিও ফুটেজ সরাতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেয়া হয়। নির্যাতনের শিকার বেগমগঞ্জ উপজেলার ওই নারীর পরিবারকে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগীর বক্তব্য গ্রহণে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কি না তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটি করে দেন আদালত। গত বছরের ৪ অক্টোবর ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। এ নিয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হলে ঘটনার হোতা দোলোয়ার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরের দিন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ তাকে আটক করে র্যাব। ৬ অক্টোবর দেলোয়ারের মাছের ঘের থেকে হাতবোমা উদ্ধার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে র্যাব দুটি মামলা করে। ১৩ অক্টোবর দেলোয়ারকে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে ওই নারীর করা অন্য দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। ওই দিন শুনানি শেষে বিচারক তাকে ওই দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।