,

প্রশমন সেবা প্রয়োজন ৭ লাখ মানুষের

সময় ডেস্ক : দেশে প্রায় সাত লাখ মানুষের প্রশমন সেবা বা প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রয়োজন। দেশের মানুষের বয়স কাঠামোর পরিবর্তনের কারণে এই সেবার প্রয়োজন হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সমাজ ও রাষ্ট্র এখনো প্রস্তুত নয়। গতকাল শুক্রবার দেশে প্রথম বাংলা ভাষায় প্রকাশিত মেডিকেল সাময়িকীর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার জার্নাল’ নামের সাময়িকীটি প্রকাশ করেছে প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছিল রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় প্রকাশনা সংস্থা ইউপিএলের কার্যালয়ে। চিকিৎসায় আরোগ্য লাভ হবে না এমন রোগীর যন্ত্রণা কমানোর সেবাই হলো প্রশমন সেবা। নতুন সাময়িকীটির নির্বাহী সম্পাদক অধ্যাপক সানজিদা শাহরিয়া বলেন, মানুষের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক সেবার প্রয়োজন হয়। শারীরিক চিকিৎসায় কোনো ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা না থাকলেও তাঁর অন্যান্য সেবার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় না। সেসব প্রয়োজন মেটানোর কাজই করে প্রশমন সেবা। নিরাপদ জন্ম যেমন মানুষের মৌলিক অধিকার, নিরাপদ মৃত্যুও মানুষের মৌলিক অধিকার—এমন মন্তব্য করে সানজিদা শাহরিয়া বলেন, দেশে প্রাপ্তবয়স্ক সাত লাখ মানুষের প্রশমন সেবা দরকার। এই সেবার প্রয়োজন আছে প্রায় ৪০ হাজার শিশুর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রয়োজন আছে এমন রোগীর মাত্র ১৪ শতাংশ প্রশমন সেবা পান। দেশে এসব রোগীর জন্য ৩০ শয্যাও নেই।
অনুষ্ঠানে প্রশমন সেবার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে যেমন আলোচনা হয়, তেমনি গুরুত্ব দেওয়া হয় বাংলা ভাষায় মেডিকেল জার্নাল প্রকাশের বিষয়টিতে। দেশে নিবন্ধিত মেডিকেল ও ডেন্টাল সাময়িকী ১৬৪টি। এর মধ্যে ৩ শতাংশ মানসম্মত বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের আহ্বায়ক আহমেদ মোশতাক রাজা চৌধুরী। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের কিছু সূচকে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে থাকলেও গবেষণার ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তান এগিয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার পরপরই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বাংলা ভাষায় স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিষয়ক প্রবন্ধ এবং প্রতিবেদন প্রকাশ শুরু করে। প্রায় চার দশক আগে চিকিৎসাশাস্ত্রের বই বাংলায় অনুবাদ করার কাজে যুক্ত ছিলেন বারডেম হাসপাতালের সাবেক পরিচালক (ল্যাব সার্ভিসেস) অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষায় মেডিকেল জার্নাল প্রকাশ হওয়াতে আশার আলো দেখছি।’
দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা প্রশমন সেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন বিএসএমএমইউর প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদ। সমাপনী বক্তব্য তিনি বলেন, বিশ্ব প্রশমন সেবার দুটি ধারা দেখা যায়। একটি প্রাতিষ্ঠানিক সেবা, অন্যটি কমিউনিটিভিত্তিক বা জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে সেবা। বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত কমিউনিটিভিত্তিক প্রশমন সেবা।


     এই বিভাগের আরো খবর