,

নবীগঞ্জে যুবতীর আত্মহত্যা মিথ্যা মামলায় চাচা জেলে! জেএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রের ভবিষৎ অনিশ্চিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জের পল্লীতে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এক যুবতীর আত্মহত্যা করার ঘটনায় বেশ আলোচনার সৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃৃষ্টি হয়েছে। প্রেমের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য নিহতরে পিতা সুকমার দাস বাদী হয়ে তার আপন ভাই সুশীল দাশ ও দুই ভাতিজাকে আসামী করে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করায় স্কুল ছাত্র শুভ্র দাশ (১৬) ও সাগর দাশ (১৩) এর পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিনা অপরাধে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সুশীল দাশ হাজত বাসে থাকায় এবং দুই স্কুল ছাত্রের ভবিষৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় অসহায় পরিবারটি একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলা কালিয়ার ভাঙ্গা ইউনিয়নের রানীগাও গ্রামের সুকুমার দাশের যুবতী কন্যা রুনু রানী দাশ(২০) পরিবারের অসচ্ছলতার কারনে মাত্র অষ্টম শ্রেনী পড়াশোনা করে আর পড়াশোনা করতে পারেনি। যার কারনে একটি এনজিওর আওতাধীন শিশু স্কুলে শিক্ষকতা করে আসছে। এরই সুবাদে পাশ্ববর্তী পুরানগাও গ্রামের এক জনৈক যুবক ইমামবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের সুবাদে প্রায়ই ঐ যুবক তাদের বাড়ীতে আসা যাওয়া করত। দীর্ঘদিন প্রেম করে ও বিয়ের আশ্বাস না পাওয়ায় এবং ঐ যুবকের অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার খবরে বেশ কিছুদিন যাবত ঐ যুবক ও রুনুর মাঝে মনোমানিল্য চলে আসছিল। গত ২১ সেপ্টেম্বর রবিবার সকালে রানীগাও গ্রামের সুকুমার দাশ ও তার আপন ভাই সুশীল দাশের লোকজনের মাঝে পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনার প্রায় ২ ঘন্টা পর রুনু প্রেমিকের অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার কারনে প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার অভিমানে ঘরে থাকা কিটনাশক পান করে। বিষয়টি পরিবারের লোকজনের গোছরে আসলে সাথে সাথে রুনুকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিষক্রিয়ার তার মৃত্যু ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুর পূর্বে রুনু তার মৃত্যুর জন্য পরিবারের বা তার চাচার পরিবারের কেউ দায়ী নয় এবং এ ব্যাপারে কোন মামলা না করার জন্য তার পিতাকে বলে যায়। কিন্তু মৃত্যুর পর গ্রামের কিছু লোকজনের ইন্ধনে সুকুমার দাশ বাদী হয়ে তার আপন ভাতিজা নাবালক শিশু অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র সাগর দাশ, শুভ্র দাশ ও তার পিতা সুশীল দাশকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি তার মেয়ে রুনুকে তার ভাতিজা শুভ্র দাশ বিয়ের প্রস্তাবে উত্যক্ত করার অভিযোগ আনলেও পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ঐদিন সকালে রুনু দাশকে বিবস্ত্র করিয়া মারপিট করা হয়েছে যার কারনে সে আত্মহত্যা করেছে। অথচ বাদীর অভিযোগে বলা হয়েছে মারামারির খবর শোনে সুকুমার দাশ বাড়ীতে গিয়ে তার কন্যা রুনু দাশকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে রুনু দাশ তার কিছু হয়নি এবং চিকিৎসার কোন প্রয়োজন নাই বলে জানায়। একটি ঘটনায় পুলিশের প্রতিবেদন এবং বাদীর অভিযোগের মাঝে অসঙ্গতি থাকার কারনে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রেমের ঘটনায় মৃত্যুবরন কারী রুনু দাশের মৃত্যুকে ধামচাপা দিতে এবং ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য বাড়ীতে ডেকে এনে আপসের কথা বলে মামলার বাদী সুচতুর সুকুমার দাশ গরীব অসহায় নিরপরাধ আপন ভাই সুশীল দাশকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। অপর দুই আসামী তার পুত্র অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র সাগর দাশ ও একাদশ শ্রেনীর ছাত্র শুভ্র দাশ মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরছে। যার ফলে স্কুল ছাত্র সাগর দাশ আগামী ২ নভেম্বর অষ্টম শ্রেনীর ফাইনাল পরীক্ষা জেএসসি’তে অংশ নিতে না পারায় তাদের ভবিষৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক হয়রানি মামলার কারনে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পিতা সুশীল দাশ জেলে থাকায় পরিবারের লোকজন বর্তমানে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এদিকে লোকমুখে শোনা যায় মামলার বাদী সুকুমার দাশ তার ভাই সুশীল দাশ বসতভিটা দিয়ে দিলে মামলা আপস মিমাংশা করবে বলে প্রচার করে। এভাবে একটি প্রেমের ঘটনায় আত্মহত্যার বিষয়কে ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য মিথ্যা মামলায় আপন ভাই ভাতিজাকে আসামী করে জেলে পাঠানোর বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে বলে এলাকবাসীর ধারনা। তাই এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.